বিটকয়েন কি? বিটকয়েন কি বাংলাদেশে বৈধ?

বিটকয়েন কি ও বিটকয়েন কিভাবে কাজ করে? বিটকয়েন কি এবং বিটকয়েন উপার্জনের উপায়? বিটকয়েন কি বাংলাদেশে বৈধ? যারা বিট কয়েন সম্পর্কে কিছু জানেন না এবং বিটকয়েন সম্পর্কে জানতে চান। তারা এই পোষ্টের মাধ্যমে সব জানতে পারবেন।

বর্তমান সময়ে ইন্টারনেটের সাহায্যে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব হয়েছে। ঘরে বসে ইন্টারনেট থেকে অর্থ উপার্জন করার অনেক উপায় রয়েছে। অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জনের উপায়গুলোর মধ্যে হল বিটকয়েন একটি, যার মাধ্যমে আমরা প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারি।

পোস্ট সূচিপত্র:

বিটকয়েন কি?

বিটকয়েন হল একটি ভার্চুয়াল মুদ্রা বা একটি ক্রিপটোকারেন্সি, যা SATOSHI NAKAMOTO নামের একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি বা একাধিক ব্যক্তির বা একটি দল ২০০৮ সালে বিটকয়েন আবিষ্কার করেন। ২০০৯ সালে বিটকয়েনর প্রচলন শুরু হয়। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, বিটকয়েন হচ্ছে ডিজিটাল মুদ্রা যা দিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে পিয়ার-টু-পিয়ার (peer-to-peer) ট্রানজেকশন করা যায়।

বাকি মুদ্রাগুলোর সাথে বিটকয়েনর পার্থক্য হল- বিটকয়েনকে আমরা দেখতে এবং টাচ করতে পারব না। অর্থাৎ এটি কোনো পদার্থ বা বস্তু নয়। বিটকয়েনকে আমরা কেবল মাত্র অনলাইন ওয়ালেট তৈরি করে সেখানে জমা রাখতে পারি। বিটকয়েন আসলে বিকেন্দ্রীভূত মুদ্রা। বিটকয়েনকে নিয়ন্ত্রণ করার মত কোনো কেন্দ্রীয় সংস্থা বা কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক নেই। সহজভাবে বলতে গেলে, কোনো কেন্দ্রীয় সংস্থা বিটকয়েনর মালিক নয়।

পেপাল বা পেওনিয়ার এর মতো সার্ভিসগুলো প্রথাগত উপায় অনুসরণ করে ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ড/পেমেন্ট নেটওয়ার্কের সাহায্যে অর্থ লেনদেন করে। অন্যদিকে বিটকয়েন হলো ডিসেন্ট্রালাইজড অর্থ, যা পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে যে কেউ কোনো ধরাবাঁধা নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই আদান প্রদান করতে পারে।
বিটকয়েনের মাধ্যমে হওয়া প্রতিটি লেনদেন ব্লকচেইনে লিখিত থাকে, যা অনেকটা ব্যাংকের খতিয়ানের মত কাজ করে। মূলত এটি বিটকয়েন দ্বারা ঘটিত সকল লেনদেনের একটি রেকর্ডস্বরুপ। বিটকয়েন ব্লকচেইনের তথ্য সব নেটওয়ার্ক জুড়ে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকে। কোনো প্রতিষ্ঠান, দেশ বা থার্ড পার্টি এটি নিয়ন্ত্রণ করেনা এবং যে কেউ বিটকয়েনের অংশীদার হতে পারে।

বিটকয়েনের সাপ্লাই কিন্তু নির্দিষ্ট। সব মিলিয়ে মাত্র ২১ মিলিয়ন বিটকয়েন রয়েছে। এই অংকের চেয়ে বেশি মাত্রার বিটকয়েন তৈরি বা উৎপাদন সম্ভব নয়। সকল বিটকয়েন ব্যবহারকারী এই অর্থ ভাগাভাগি করেন। যদিও এখনো বিটকয়নের এই পুরো পরিমাণ সংগ্রহ করা হয়নি।

বিটকয়েন কিভাবে কাজ করে?

বিটকয়েন ভিসা কার্ডের মতো পেমেন্ট নেটওয়ার্ক বা পেপালের মতো পেমেন্ট সার্ভিসের মতো প্রচলিত পদ্ধতিতে কাজ করেনা। বিটকয়েন কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়না। বিশ্বের প্রথম মুক্ত পেমেন্ট নেটওয়ার্ক হলো বিটকয়েন, যেখানে যে কেউ অংশগ্রহণ করতে পারে। বিটকয়েন তৈরির পেছনে প্রধান উদ্দ্যেশই ছিলো ইন্টারনেট ব্যবহার করে একটি ডিসেন্ট্রালাইজড পেমেন্ট ব্যবস্থা তৈরি করা।

বিটকয়েনের অন্যতম প্রধান উপাদান হলো ব্লকচেইন যা বিটকয়েন আদান-প্রদানের হিসাব রাখে। তবে বিটকয়েন ডিসেন্ট্রালাইজড হওয়ায় যে কেউ লেনদেনের তথ্য দেখতে পারে এবং কেউ এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। চলুন আরো ভালোভাবে জানা যাক বিটকয়েন কিভাবে কাজ করে।

“মাইনিং রিগ” নামে পরিচিত স্পেশাল কম্পিউটার প্রতিটি লেনদেনের তথ্য রেকর্ড ও ভেরিফাই করে। প্রথম দিকে সাধারণ যে কোনো কম্পিউটার ব্যবহার করে বিটকয়েন মাইনিং করা যেতো। তবে বর্তমানে বিটকয়েন মাইনিং করতে অনেক শক্তিশালী কম্পিউটারের প্রয়োজন হয়। ২০১৯ সালের তথ্য অনুসারে ২০০৯ সালের বিটকয়েনের চেয়ে বর্তমানে বিটকয়েন মাইনিং করতে ১২ ট্রিলিয়ন গুণ কম্পিউটিং পাওয়ার প্রয়োজন।
মূলত কম্পিউটিং পাওয়ার ব্যবহার করে মাইনিং এর মাধ্যমে বিটকয়েন মাইন করা যায়। বিটকয়েন মাইনিংকে অনেকটা লটারি বা রেসের সাথে তুলনা করা যায়। মূলত বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে যে কেউ উক্ত রেস বা লটারির পুরস্কার পেতে পারে। এখানে পুরস্কার হলো বিটকয়েন। প্রতি লেনদেনে মাইনিং এর এই পুরস্কার পরিবর্তন হতে থাকে।

বিটকয়েন লেনদেনে সহায়তা করার জন্য এসব মাইনিং কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। যারা এই কম্পিউটার গুলোর মালিক তাদেরকে বিটকয়েন মাইনার বলা হয়। বিটকয়েন লেনদেনে সহায়তা করার পুরস্কারস্বরূপ তারা বিটকয়েন পেয়ে থাকে। তবে বর্তমানে এরকম বিটকয়েন মাইনিং আর আগের মত লাভজনক নেই।

প্রথমদিকে বিটকয়েনের কোনো মূল্যই ছিলো না। ২০১৮ সালে এসে এক বিটকয়েন এর মূল্য প্রায় ৭,৫০০ ডলার ছিলো। তবে বিটকয়েনের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিটকয়েন কিনতে হয় না। ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর অংকের বিটকয়েনের মালিক হওয়া সম্ভব।

বিটকয়েনের ক্ষুদ্রতর অংশকে সাতোশি বলা হয়। ১০০ মিলিয়ন সাতোশি মিলে তৈরি হয় এক বিটকয়েন। সাতোশি নাকামোতো এমন ভাবে বিটকয়েনের নেটওয়ার্ক স্থাপন করেন, যাতে ২১ মিলিয়নের অধিক বিটকয়েন মাইন করা সম্ভব না হয়। বর্তমানে মাইন করার মত প্রায় ৩ মিলিয়ন বিটকয়েন অবশিষ্ট রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে ২১৪০ সালের মধ্যে সকল বিটকয়েন মাইন করা হয়ে যাবে।

বিটকয়েন কি বাংলাদেশে বৈধ ?

বিটকয়েন বাংলাদেশে বৈধ নয়, এক কথায় নিষিদ্ধ। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা বাংলাদেশ ব্যাংক দেশে এই মুদ্রার ব্যবহার বৈধ করেনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করে বিটকয়েন লেনদেনে করলে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ করার যে আইন সেই সম্পর্কিত আইনের লঙ্ঘন হতে পারে।

২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের জনগণকে বিটকয়েনের বিষয়ে সতর্ক করে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে দেশে বিটকয়েনের লেনদেন হচ্ছে, যা কোনও নিয়ন্ত্রক সংস্থা কর্তৃক অনুমোদিত নয়। এসব ভার্চুয়াল মুদ্রার ব্যবহার বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৪৭, সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর দ্বারা সমর্থিত হয় না। ফলে মানুষের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

বিটকয়েন ওয়েবসাইট থেকে আয়

বর্তমানে বিটকয়েনের ওয়েবসাইটটি হল bitcoin.org আমাদের মধ্যে অনেকেই ভাবি বিটকয়েন কিনতে পাওয়া যায়। যা কোন একটি মুদ্রার মত দেখতে। কিন্তু বাস্তবে বিটকয়েনের কোন আকৃতি নেই। বিটকয়েন ক্রয়ের বেশ কিছু উপায় রয়েছে। যে কোনো সিরিজ সংখ্যা কিংবা অক্ষরে হয়ে সংরক্ষণ থাকে বিটকয়েন যা পাবলিক ব্লকচেইনের মাধ্যমে ভেরিফাইড করা হয়।
সুতরাং এই সিরিজ সংখ্যা অনলাইনে বিটকয়েন ওয়ালেটে রাখতে পারেন। বর্তমান সময়ে বিটকয়েন ক্রয় অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। আপনি ইচ্ছা করলে সরাসরি একটি বিটকয়েন কিনতে পারবেন না। বিটকয়েন কিনতে হলে আপনাকে বেশ কিছু প্রসেসের মাধ্যমে যেতে হবে। প্রথম প্রথম এই লেনদেন একটু কষ্টজনক। আপনাকে বিটকয়েন কিনতে হলে সাতশি আকারে কিনতে হবে। কেননা বিটকয়েনের মূল্য অনেক বেশি হওয়ায় আস্তো একটা বিটকয়েন ক্রয় করলে পরে লেনদেনে ভাংগাতে সমস্যা হয়। যাইহোক, আপনাকে বিটকয়েন কিনতে বিভিন্ন অনলাইন এক্সচেঞ্জের সাথে যোগাযোগ করতে হবে কিংবা আপনি অন্য কিছু বিনিয়োগ করেও সংগ্রহ করতে পারেন।

বিটকয়েন কিভাবে আয় করা যায়?

সোনা বা অন্য কোনো গয়নার মতই আপনি আপনার দেশীয় মুদ্রাতেই বিটকয়েন কিনতে পারবেন। আমরা বিটকয়েন buy করার দুটি বিশ্বস্ত website এবং তাদের বিশেষত্ব নিয়ে আলোচনা করব। এই ওয়েবসাইটগুলো থেকে আপনি খুব সহজেই bitcoin buy করতে পারবেন।

আপনি তিনটি উপায়ে বিটকয়েন উপার্জন করতে পারবেন। কিভাবে বিটকয়েন একাউন্ট তৈরি করতে হয় তার সম্পূর্ণ তথ্য দিয়েছি।

১. বিটকয়েন উপার্জন করার প্রথম উপায় হল যদি আপনার টাকা থাকে। তাহলে আপনি সরাসরি $ 999 ডলার প্রদান করে একটি বিটকয়েন কিনতে পারেন। আপনি যদি বিটকয়েন কিনতে চান, তাহলে আপনাকে সম্পূর্ণ $ 999 দিতে হবে না। আপনি চাইলে বিটকয়েনের ক্ষুদ্রতম ইউনিট “সতোশি” কিনতে পারেন।

বাংলাদেশে যেমন ১ টাকাতে ১০০ পয়সা, ঠিক তেমনি ১ বিটকয়েনে ১০০ মিলিয়ন সতোশি। আপনি যদি চান, আপনি অল্প পরিমাণে বিটকয়েন সতোশি কিনে ধীরে ধীরে ১ বা তার বেশি বিটকয়েন জমা করতে পারেন। আপনার কাছে যখন বিটকয়েন থাকবে এবং বিটকয়েনের দাম বৃদ্ধি পাবে, তখন আপনি বিট কয়েন বিক্রয় করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

২. বিটকয়েন উপার্জনের আরেকটি উপায় হল আপনি যদি অনলাইনে কারও কাছে কোন পণ্য বিক্রয় করেন এবং সেই যদি ক্রেতার কাছে বিটকয়েন উপস্থিত থাকে। তাহলে আপনি টাকার বিনিময়ে বিটকয়েন নিবেন। এক্ষেত্রে আপনি সেই পণ্যগুলো তাদের কাছেও বিক্রয় করবেন এবং আপনি বিটকয়েনও পাবেন যা আপনার বিটকয়েন ওয়ালেটে সংরক্ষিত থাকবে। আপনি যদি চান, পরবর্তীতে আপনি সেই বিটকয়েন অন্য ব্যক্তির কাছে উচ্চ মূল্যে বিক্রয় করেও লাভ পেতে পারেন।
৩. বিটকয়েন আয় করা তৃতীয় উপায় হল বিটকয়েন মাইনিং। মাইনিং করার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে উচ্চ গতির প্রসেসর সহ একটি কম্পিউটার যার হার্ডওয়্যারও ভালো হতে হবে। আমরা শুধুমাত্র অনলাইন পেমেন্টের জন্য বিটকয়েন ব্যবহার করি এবং যখন কেউ বিটকয়েন দিয়ে অর্থ প্রদান করে তখন সেই লেনদেনটি যাচাই করা হয়।

যারা এগুলো যাচাই করে, আমরা তাদের খনি বলি এবং সেই খনির উচ্চ কর্মক্ষম কম্পিউটার এবং জিপিইউ আছে এবং তারা এর মাধ্যমে লেনদেন যাচাই করে। তারা লেনদেনটি সঠিক কিনা তা যাচাই করে বা এতে কোনো ধরনের হেরফের হয়েছে কিনা চেক করে। এই যাচাইয়ের পরিবর্তে, তারা পুরস্কার হিসেবে কিছু বিটকয়েন পায় এবং এভাবে নতুন বিটকয়েন বাজারে আসে।যে কেউ এটি করতে চাই তার জন্য উচ্চ গতির প্রসেসর সহ একটি কম্পিউটার প্রয়োজন, যা কেনার জন্য প্রত্যেকের সামর্থ্য থাকে না।

প্রতিটি দেশে যেমন বছরে একটি মুদ্রা মুদ্রণ করার একটি সীমা রয়েছে যে আপনি বছরে কতগুলো নোট মুদ্রণ করতে পারবেন। একইভাবে বিটকয়েনেরও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং ২১ মিলিয়নের বেশি বিটকয়েন বাজারে প্রবেশ করতে পারে না। অর্থাৎ, বিটকয়েনের সীমা মাত্র ২১  মিলিয়ন, এর চেয়ে বেশি বিটকয়েন কখনও পাওয়া যাবে না।

বিটকয়েন ব্যবহারের সুবিধা

  • বিটকয়েনে ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ডের তুলনায় ট্যাক্স অনেক কম কাটা হয়ে থাকে।
  • বিটকয়েন পৃথিবীর যে কোনো জায়গায় এবং যেকোনো সময়ে পাঠানো যায়।
  • ব্যাংকে যেমন নিয়মিত লেনদেন না করলে আমাদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু এখানে সেই অসুবিধাটি নেই। আপনার বিটকয়েন অ্যাকাউন্ট কোনো দিনও বন্ধ হবে না, যদি আপনি জালিয়াতি বা প্রতারণা না করেন।
  • যদি আপনি দীর্ঘ সময়ের জন্য বিটকয়েন ইনভেস্ট করতে চান তাহলে, কিন্তু ভবিষ্যতে আপনার অনেক লাভ হতে পারে। কারণ যতই দিন যাচ্ছে, বিটকয়েনের দাম ততই বেড়ে চলছে।
  • বিটকয়েন লেনদেনের উপর কোনো সরকার বা প্রতিষ্ঠান নজর রাখে না, তাই কিছু কিছু লোক আছেন যারা খারাপ কাজের জন্য লেনদেন করেন, এগুলো তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়ক হয়ে থাকে।
  • বিটকয়েন একটি জনপ্রিয় অর্থব্যবস্থা, যার ফলে বিশ্বের যেকোনো দেশে যেকোনো সময় কোনো বাড়তি ফি ছাড়া বিটকয়েন ব্যবহার সম্ভব

বিটকয়েন ব্যবহারের অসুবিধা 

  • বিটকয়েনকে নিয়ন্ত্রণ করার কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংক নেই বলে। বিটকয়েনের দাম হঠাৎ করেই কমে যায় বা বেড়ে যায়। তাই ঠিক মত খেয়াল না রাখলে আপনার লোকসান হতে পারে।
  • যদি দিন আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে যায়। তাহলে আপনার কিছুই করার থাকবে না। এমনকি কেউ আপনাকে কোন ভাবেই সাহায্য করতে পারবে না।
  • পেমেন্ট করার সময় পেমেন্ট Unsuccessful হলেও অনেক সময় টাকা কেটে নেয়, সেগুলো আর ফিরে পাওয়া যায় না।
  • বিটকয়েন যেহেতু ছদ্মনামে এবং কেন্দ্রীয় কোনো কর্তৃপক্ষের অন্তরালে লেনদেন করা সম্ভব। তাই বিটকয়েন ব্যবহার করে কোনো বেআইনি লেনদেন হলে সেটা নির্ণয় করা সম্ভব হয় না।

বিটকয়েন ওয়ালেট কি?

বিটকয়েনকে আমরা কেবলমাত্র ইলেকট্রনিক্যালি জমা করতে পারি।বিটকয়েন জমা করার জন্যই বিটকয়েন ওয়ালেটের প্রয়োজন হয়ে। বিটকয়েন ওয়ালেট বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে, যেমন- Desktop wallet, Mobile wallet, Web based wallet, Hardware wallet ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে আপনি আপনার সুবিধা মত যেকোনো ওয়ালেট বানাতে পারেন। আর এটি একটি ইউনিক পরিচয় পত্রের মত কাজ করে থাকে।

যেমন ধরুন – আপনি কোন জায়গা থেকে bitcoin income করলেন, এবার সেগুলো স্টোর করার জন্য আপনার কাছে একটি নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র চাওয়া হবে, যেখানে আপনার বিটকয়েন গুলো জমা হবে।
তাছাড়াও আপনি যদি বিটকয়েন কিনতে বা বিক্রয় করতে চান তাহলেও আপনার বিটকয়েন ওয়ালেটের প্রয়োজন হবে এবং এরপর আপনি যতগুলো বিটকয়েন বিক্রয়  করবেন সেগুলো transfer bitcoin wallet এর মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যাংক একাউন্টে নিয়ে নিতে পারবেন।

কিভাবে বিটকয়েন ওয়ালেট একাউন্ট খুলবেন?

বিটকয়েন ওয়ালেট একাউন্ট খোলার জন্য অনেক সাইট আছে তার মধ্যে Coinbase এবং Blockchain সবচেয়ে জনপ্রিয়। তবে আমি Blockchain এর তুলনাই Coinbase কেই বেশি প্রাধান্য দিবো কারন Coinbase অনেক বেশি সিকিউরড এবং ব্যবহার করা খুব সহজ এবং সব থেকে বড় সুবিধা Coinbase থেকে বিটকয়েন ট্রান্সফার করতে কোনো ফি প্রদান করতে হয় না। কিন্তু Blockchain থেকে বিটকয়েন ট্রান্সফার করতে প্রচুর ফি প্রদান করতে হয়।

কিভাবে কয়েনবেইজ একাউন্ট খুলবেন?

Coinbase একাউন্ট খুলতে  লিংকে যান তারপর Signup করুন। তারপর ইমেইল একটা লিংক যাবে সেটাতে ক্লিক করে ভেরিফাই করবেন। তারপর একাউন্টৈ লগইন করে Dashboard থেকে BTC Wallet এ গিয়ে My adress এ ক্লিক করলে ৩৪ ডিজিটের এলোমেলো অক্ষরের একটা এড্রেস পাবেন এটাই আপনার ওয়ালেট এড্রেস এর মাধ্যমেই আপনার উপার্জিত বিটকয়েন আপনার একাউন্ট এ জমা হবে। 

আরেকটা পদ্ধতিতে আপনি Coinbase একাউন্ট খুলতে পারেন। এটা সব থেকে সহজ পদ্ধতি এই পদ্ধতিতে একাউন্ট খুলতে প্রথমে আপনাকে Google Playstore থেকে Coinbase অ্যাপটি নামাতে হবে। তারপর অ্যাপটি Open করে Signup করে ইমেইল ভেরিফাই করে নিতে হবে। তারপরে অ্যাপটি Open করে Dashboard প্যানেল থেকে Btc Wallet এ ক্লিক করতে হবে। এরপর ডানদিকের এড্রেস আইকন এ ক্লিক করলে ৩৪ ডিজিটের বিটকয়েন এড্রেস পাবেন। এড্রেসের নিচের Copy Address এ ক্লিক করলে Address কপি হয়ে যাবে। এই Address টি বিভিন্ন বিটকয়েন ইনকামের সাইটে রেজিস্ট্রেশন করতে কাজে লাগবে।

সবশেষে বলা যায় যে, এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম বিটকয়েন মানে কি, বিটকয়েন কি বাংলাদেশে বৈধ, বিটকয়েন ওয়েবসাইট কোনটি, বিটকয়েন কিভাবে আয় করা যায়, বিটকয়েন কিভাবে কাজ করে, কিভাবে বিটকয়েন একাউন্ট খোলে যায় এই সব কিছু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
2 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
  • mukul
    mukul May 7, 2022 at 9:36 PM

    very good

    • jorip
      jorip May 8, 2022 at 9:52 AM

      ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জরিপ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url