হজম শক্তি বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায়-হজম শক্তি বাড়ানোর উপায়
হজম শক্তি বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায়-হজম প্রক্রিয়া আমাদের সুস্থতার সাথে সম্পর্কিত। হজমে ব্যাঘাত হলে হাইপার অ্যাসিডিটি, গ্যাস, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য ও হার্টবানের মত উপসর্গগুলো দেখা দেয়। হজমে সমস্যা বা বদহজম দূর করতে হলে হজম শক্তি বাড়াতে হবে। এই নিবন্ধে জানানো হয়েছে কিভাবে হজম শক্তি বৃদ্ধি করা যায় অর্থাৎ দ্রুত খাবার হজমের উপায় সম্পর্কে।
প্রত্যেকেরই মাঝে মাঝে বদহজম হয় এবং এটা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার। কারণ সবার হজম শক্তি এক হয় না। একই জাতীয় খাদ্য অনেকের খুব সহজেই হজম হয় আবার অনেকের হজম হতে সমস্যা হয়।
হজম শক্তি কমে যাওয়ার কারণে প্রায়ই বদহজম হলে বিষয়টা অনেক অস্বস্তিকর ও কষ্টদায়ক। তবে নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। এমন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় রয়েছে। এই আর্টিকেলে হজমশক্তি বৃদ্ধির যে উপায়গুলো রয়েছে সেগুলো অনুসরণ করে খুব সহজেই বদহজ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
আমাদের লাইফ স্টাইল ও খাবারের ধরন হজম ক্রিয়ার সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। ট্রান্সফ্যাট ও জাঙ্ক ফুড হজম শক্তি কমিয়ে দেয় অর্থাৎ বদহজম তৈরি করে। অপরদিকে ফাইবার জাতীয় খাবারগুলি হজম ক্রিয়াকে উন্নত করে অর্থাৎ হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
বদহজমের কারণে খাবার হতে সর্বাধিক পুষ্টি পাওয়া যায় না। যার ফলে অপুষ্টি জনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আমাদের বদহজম দূর করার উপায় গুলো জানা প্রয়োজন।
পোস্ট সূচিপত্র:
- হজমশক্তি বাড়ানো যায় কিভাবে?
- হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায়
- ফাইবার যুক্ত খাবার খান
- স্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত খাবার খান
- পুষ্টিকর খাবার খান
- আদা ও আদা-চা
- মৌরি বীজ
- পর্যাপ্ত তরল খাবার ও পানি পান করুন
- মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
- মনোযোগ সহকারে খাবার খান
- এলোভেরা
- খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খান
- প্রতিদিন ব্যায়াম করুন
- পরিমাণ মতো খাবার খান
- প্রোবায়োটিক যুক্ত খাবার খান
- গ্লুটামিন ও জিংক সমৃদ্ধ খাবার খান
- কিছু বদ অভ্যাস ত্যাগ করুন
- দ্রুত খাবার হজমের উপায় নিয়ে শেষ কথা
হজম শক্তি বাড়ানো যায় কিভাবে?
একেক জনের মেটাবলিজিম বা হজমশক্তি একেক রকম হয়। অনেক সময় দেখা যায় যে একই রকম খাবার খেয়েও একজন মোটা হয় কিন্তু আরেক জন হয় না। যারা হোস্টেলে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে এ ধরণের সমস্যা দেখা যায় বলে জানান পুষ্টিবিদরা।
হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায়
দ্রুত খাবার হজমের জন্য লাইফস্টাইল ও খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনতে হবে। হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে কোন খাবার গুলো খেতে হবে আর কোন খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে এবং লাইফস্টাইলে কোন ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে, আসুন বিস্তারিত জেনে নিই।
ফাইবার যুক্ত খাবার খান
ফাইবার যুক্ত খাবার হজম শক্তি বাড়িয়ে দ্রুত খাবার হজমে সহায়তা করে। ফাইবার পানি শোষণ করে মল নরম ও পিচ্ছিল করে। ফলে মলত্যাগ সহজতর হয় অর্থাৎ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। শুকনো ফল, শাকসবজি, বাদাম ও গোটা শস্যতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার।
প্রিবায়োটিক ফাইবার হজম শক্তি বৃদ্ধি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার পাশাপাশি অন্ত্রের প্রদাহ জনিত রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। তাই হজম শক্তি বৃদ্ধিতে ও পেটের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে হবে।
স্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত খাবার খান
খাবার দ্রুত, ভালোভাবে হজম ও শোষণের জন্য প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট খাবার হজমে সাহায্য করে ও পুষ্টি শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড(Omega-3 fatty acids) এক ধরনের হেলদি ফ্যাট যা আলসারেটিভ কোলাইটিস ও পেটের অন্যান্য প্রদাহজনিত রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে।
চিয়া বীজ, বাদাম, ইলিশ মাছ ও সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে ও মস্তিষ্কের সুস্থতার জন্য ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
তবে ট্রান্সফ্যাট ও অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত খাবার হজম শক্তি কমিয়ে দেয় অর্থাৎ বদহজম তৈরি করে। অস্বাস্থ্যকর চর্বি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই আমাদের উচিত স্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত খাবার পরিমাণ মতো খাওয়া এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বি যুক্ত খাবার গুলো পরিহার করা।
পুষ্টিকর খাবার খান
খেতে সুস্বাদু হলেও ট্রান্স ফ্যাট ও পরিমার্জিত কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার গুলো হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে। যার ফলে বদহজম হয় ও হজম শক্তি কমে যায়। শুধু বদহজম নয় এই জাতীয় খাবার গুলো বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায় এবং দেহের ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী।
অস্বাস্থ্যকর ও অতিরিক্ত তেল, চর্বি, লবণ, চিনি ও ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ যুক্ত খাবার গুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় এগুলোকে অস্বাস্থ্যকর খাবার বলা যায়। তাই এই ধরনের খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
পুষ্টির চাহিদা পূরণে খেতে হবে সুষম খাদ্য। সুষম খাদ্য হলো সেই সকল খাবারগুলো যার মধ্যে ৬টি পুষ্টি উপাদান থাকে। সুষম খাদ্য পুষ্টি চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
অস্বাস্থ্যকর ও ভেজাল খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন। দূর হবে বদহজম এবং বৃদ্ধি পাবে হজম শক্তি।
আদা ও আদা-চা
জারক রস এবং এনজাইম প্রবাহ সঠিকভাবে সরবরাহ করে আদা। এর ফলে, খাবার হজম সহজ হয়। আদা বমি, পেট ফাঁপা, বদহজম, এবং ডায়রিয়া কমাতে কার্যকর। প্রতিদিন ২-৩ বার আদা চা খান। ১ চামচ আদা কুচি দেড় কাপ গরম পানিতে দিয়ে চা বানাতে হবে। ১০ মিনিট গরম করুন। এরপর আদা কুচিতে মধু মিশিয়ে আদা-চা পান করুন।
মৌরি বীজ
খাবার পর হজম বাড়াতে ১ চামচ মৌরি বীজ চাবিয়ে খেতে পারেন। হজমশক্তি বাড়াতে মৌরি চা পান করুন। এক গ্লাস পানিতে আধা চামচ মৌরি গুঁড়া মিশিয়ে দৈনিক ২ বার খেতে পারেন।
পর্যাপ্ত তরল খাবার ও পানি পান করুন
পর্যাপ্ত পানি ছাড়া কোন খাবারই ভালোভাবে হজম হয় না। তাই খাবার ভালোভাবে হজমের জন্য পর্যাপ্ত পানির প্রয়োজন। পর্যাপ্ত পানির অভাবে হজম শক্তি কমে যায় ও কোষ্ঠকাঠিন্য সহ পেটের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে চিকিৎসকরা প্রতিদিন অন্তত ২ থেকে ৩ লিটার পানি পানের পরামর্শ দেয়। যে কোন ধরনের স্বাস্থ্যকর তরল খাবার পানির ঘাটতি পূরণ করে। তাই শরীরকে হাইড্রেট রাখতে হবে পানি ও অন্যান্য তরল খাবারের মাধ্যমে। তবে ক্যাফিন যুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে খেতে পারেন শসা, জুচিনি,বাঙ্গি টমেটো, তরমুজ, স্ট্রবেরি, জাম্বুরা এবং পীচের মতো তাজা ফলমূল ও শাকসবজি। এই ধরনের খাবারগুলো দেহের পানি ঘাটতি পূরণ করে।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
মানসিক চাপ শুধু মানসিকভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না। মানসিক চাপের কারণে নানা রকম শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হয়। মানসিক চাপ হজম শক্তিতে প্রভাব ফেলে। ডায়রিয়া, আলসার, কোষ্ঠকাঠিন্য ও আইবিএস পেটের রোগ হলেও এই রোগ গুলো সরাসরি মানসিক চাপের সাথে সম্পৃক্ত।
মানসিক চাপের কারণে ভালো ঘুম হয় না। যার প্রভাব পড়ে স্বাস্থ্যের উপর। তাই হজম শক্তি বাড়াতে হলে এবং সুস্থ থাকতে হলে আমাদেরকে মানসিক চাপ কমাতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুম দুশ্চিন্তা কমায়।
মনোযোগ সহকারে খাবার খান
মনোযোগ সহকার খাবার না খেলে পেট ফাঁপা, গ্যাস, বদ হজমজনিত সমস্যাগুলো দেখা দেয়। আর এই সমস্যাগুলো হজমশক্তি কমে যাওয়ার কারণে হতে পারে। তাই হজম শক্তি বাড়াতে মনোযোগ সহকারে খাবার খেতে হবে।
এলোভেরা
এলোভেরা পরিপাকতন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। এলোভেরার রয়েছে ব্যাকটেরিয়া ও প্রদাহরোধী বৈশিষ্ট্য। এর ফলে, এটি পরিপাকনালির জ্বালা বা প্রদাহকে প্রশমিত করে।
২ চামচ এলোভেরা-জেল কমলার জুস বা পানিতে মিশিয়ে নিন। এ মিশ্রন ব্লেন্ডারে ভালোভাবে গুলিয়ে নিন। খালিপেটে প্রতিদিন সকালে খেতে পারেন। দারুন ফলাফল পাবেন, সন্দেহ নেই।
খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খান
খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খেলে হজমে সুবিধা হয়। আমাদের হজম প্রক্রিয়া মুখ থেকে শুরু হয়। ভালোভাবে চিবিয়ে খেলে হজমি রস খাবার গুলোকে খুব সহজেই হজম করতে পারে।
খাবার চিবানোর সময় মুখে লালা উৎপন্ন হয়। লালা কিছু কার্বোহাইড্রেট ও চর্বি জাতীয় খাবারকে মুখের ভেতরে ভেঙ্গে ফেলে। অর্থাৎ লালার সহায়তায় মুখের ভেতরে হজম প্রক্রিয়া শুরু হয়।
খাবার ভালোভাবে সময় নিয়ে চিবিয়ে খেলে হজমের অসুবিধা দূর হবে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে। পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য, হাইপার অ্যাসিডিটির মতো উপসর্গগুলো কমে যাবে। তাই পরামর্শ রইল খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খান।
প্রতিদিন ব্যায়াম করুন
শরীরের সুস্থতার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করার যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ব্যায়াম খাবার হজমে সহায়তা করে বিশেষ করে যে ধরনের ব্যায়াম করলে পেটের চাপ পড়ে।
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত। হাঁটাচলা, দৌড়, সাঁতার কাটা, সাইকেলিং, যোগব্যায়াম ইত্যাদি ব্যায়াম শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
নিয়মিত ব্যায়াম মানসিক চাপ কমায়। ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। তাই হজম শক্তি বৃদ্ধি, শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য প্রতিদিন ব্যায়াম করুন।
পরিমাণ মতো খাবার খান
হজম শক্তি বাড়াতে সময় মত খাবার খেতে হবে। খাবারের একটা সময়সূচি তৈরি করুন এবং এই সময়সূচি অনুযায়ী খাবার খান।
চাহিদার চেয়ে বেশি পরিমাণ খাবার খেলে পেটে অস্বস্তি, পেট ফাঁপা ও বদহজম হয়। অতিরিক্ত খাবার খাওয়াও হজম শক্তি কমে যাওয়ার একটি কারণ। তাই চাহিদার চেয়ে বেশি খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকলে পরিত্যাগ করুন।
একটু খেয়াল করতে হবে কোন ধরনের খাবার গুলো আপনার হজমে সমস্যা করে। হজমে সমস্যা করে এমন ধরনের খাবার অল্প খেতে হবে। যেমন: অনেকের দুধ খেলে হজমে সমস্যা হয়। তাই বলে দুধ খাওয়া একবারে বন্ধ না করে অল্প করে খান। দুধের পরিবর্তে দই খেতে পারেন। দই খেলে হজম শক্তি বাড়ে।
প্রোবায়োটিক যুক্ত খাবার খান
হজম শক্তি বাড়াতে খেতে পারেন প্রবায়োটিক যুক্ত খাবার। আমাদের পেটে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যেগুলো হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। পেটে এই জাতীয় ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা যত বেশি হবে খাবার তত ভালোভাবে হজম হবে।
হজমে সাহায্যকারী এই ব্যাকটেরিয়া গুলোকে বলা হয় প্রোবায়োটিকস। প্রোবায়োটিকস জটিল খাদ্য কনা ভেঙ্গে হজমে সহায়তা করে। টক দই একটি প্রোবায়োটিক যুক্ত খাবার। তাই হজম শক্তি বাড়াতে খেতে পারেন টক দই।
গ্লুটামিন ও জিংক সমৃদ্ধ খাবার খান
গ্লুটামিন হল এক ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড।গ্লুটামিন পেটের জন্য খুব উপকারী। টার্কি, সয়াবিন, ডিম এবং বাদাম জাতীয় খাবারে গ্লুটামিন পাওয়া যায়।
জিংক পেটের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। জিংকের অভাবে দেখা দেয় নানা ধরনের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ডিজিজ। যেমন: ডায়রিয়া, কোলাইটিস, অন্ত্র ছিদ্র হয়ে যাওয়া, বদহজম ইত্যাদি।
১ জন পুরুষের প্রতিদিন ১১ মিলিগ্রাম এবং ১ জন মহিলার প্রতিদিন ৮ মিলিগ্রাম জিংক প্রয়োজন। জিংকের ঘাটতি পূরণে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জিংক যুক্ত খাবার খেতে হবে।
কিছু বদ অভ্যাস ত্যাগ করুন
ধূমপান সবদিক থেকে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এমনকি ধূমপান হজম শক্তি কমায়। ধূমপানের কারণে পেটের আলসার, আলসারেটিভ কোলাইটিস ও অ্যাসিড রিফ্লাক্স এর মতো পেটের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অ্যালকোহল সেবন বা মদ্যপানের কারণে পেটে অ্যাসিড উৎপাদন বেড়ে যায় অর্থাৎ হাইপার অ্যাসিডিটি হয়। হাইপার অ্যাসিডিটি হলে পেটে দেখা দেয় নানা সমস্যা এমনকি পেটে আলসার পর্যন্ত হতে পারে।
অত্যাধিক মদ্যপানের কারণে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টে রক্তপাত পর্যন্ত হতে পারে। তাই এই ধরনের জটিল সমস্যা এড়াতে, হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে ও সুস্বাস্থ্যের জন্য ধূমপান এবং মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে দ্রুত ত্যাগ করুন।
রাতে দেরি করে খাবার খাওয়া দুর্বল হজম শক্তির একটি অন্যতম প্রধান কারণ। রাতে অন্ততপক্ষে খাবার খাওয়ার ৩ থেকে ৪ ঘন্টা পরে শুতে যাওয়া উচিত। রাতে খাবার খাওয়ার পর শুয়ে পড়লে খাবার পাকস্থলী থেকে খাদ্যনালীতে উঠে আসে। আর এই কারণে বদহজম, গ্যাস্ট্রিক, হার্টবানের মতো সমস্যাগুলো দেখা দেয়।
খাবার পাকস্থলী থেকে ছোট অন্ত্রে যেতে ৩ থেকে ৪ ঘন্টা সময় লাগে। তাই রাতে খাবার খাওয়ার ৩ থেকে ৪ ঘন্টা পরে শুয়ে পড়লে হজম শক্তি ভালো থাকবে।
দ্রুত খাবার হজমের উপায় নিয়ে শেষ কথা
এই আর্টিকেল জানানো হয়েছে, হজমের সমস্যা দূর করার কতগুলো উপায় সম্পর্কে। দুর্বল হজম শক্তির কারণে পেটে নানা উপসর্গ দেখা দেয়। লাইফ স্টাইল ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের মাধ্যমে হজমশক্তি উন্নত করা যায়
প্রোবায়োটিক, ফাইবার, স্বাস্থ্যকর চর্বি,গ্লুটামিন ও জিংক সমৃদ্ধ খাবার গুলো হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। মানসিক চাপ, পর্যাপ্ত ঘুম ও নিয়মিত ব্যায়াম হজম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে অর্থাৎ হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। দৈনিক আমাদের ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। রাতে দেরি করে ঘুমানো যাবে না এবং সকালে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা যাবে না।
অস্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি কিছু খারাপ অভ্যাস দুর্বল হজম শক্তির জন্য দায়ী। বিশেষ করে ধূমপান, মদ্যপান ও রাতে দেরি করে খাবার খেয়ে শুয়ে পড়া।
জরিপ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url