মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শেখার উপায়

বর্তমান সময়ে ঘরে বসে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সেরা একটি উপায় হলো ফ্রিল্যান্সিং। তাই অনেকের আবার মোবাইল দিয়ে কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন এ বিষয়ে জানার অনেক আগ্রহ থাকে। তাদের চিন্তার আর কোনো কারণই নেই। আজকের এই আর্টিকেলটি মূলত তাদের জন্যই, যারা মূলত মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চায়। আজকের আর্টিকেল থেকে কিভাবে একটি স্মার্টফোন দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শেখা যাবে সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

পোস্ট সূচিপত্র:ফ্রিল্যান্সিং মূলত কী?

ফ্রিল্যান্সিং হলো এমন একটা স্বাধীন পেশা, যেখানে একজন কর্মী নিজের স্বাধীনতার সাথে প্রতিটি কাজ ও টাস্কের ভিত্তিতে টাকা অয় করতে পারেন। এখানে কোনো ব্যক্তি সরাসরি কোনো কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত নয় বা কোনো কোম্পানির অধীনে কাজ করছে না। একজন ব্যক্তি নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করতে পারে যেকোনো প্রজেক্টে , নির্দিষ্ট কাজের ভিত্তিতে টাকা ইনকাম করতে পারে। এমনকি, সেই পেশাদার চুক্তিতে বা এক বা একাধিক ক্লায়েন্টের অধীনে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারে।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে আয়ের সুযোগ থাকে প্রতি ঘন্টা/দিন/মাস হিসেবেও । মূলত, যারা Freelancing এ কাজ করে, তাদেরকেই ফ্রিল্যান্সার বলে। ফ্রিল্যান্সাররা আয় করে তাদের দক্ষতা বা স্কিলের মাধ্যমে।

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কেন শিখবো?

সোজা ভাষায় বলতে গেলে চলে কাজের দুনিয়া বিশাল বড় পেশা হলো ফ্রিল্যান্সিং। মানে, ফটোগ্রাফি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং বা ব্যবস্থাপনা; ফ্রিল্যান্সিং চাকরি সব ইন্ডাস্ট্রিতে সমান জনপ্রিয়। আর বলেছেন জনপ্রিয়তার প্রধানত দুটো কারণও আছে। একটি হলো ফ্রিল্যান্স(freelance) কর্মী হলে কোম্পানিগুলোকে স্থায়ী কর্মচারীদের মতো অর্থনৈতিক ও নৈতিক দায়িত্ব নিতে হবে না। যে কারণে, কোম্পানির খরচ কমানো এবং লাভের মাত্রা অনেক বেশি। অন্যদিকে যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের জীবন-জীবিকারও পরিবর্তন হচ্ছে।

অনেক মানুষই Fixed Job এর তুলনায় স্বাধীনভাবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের(Freelancing)পথটাই বেছে নিচ্ছেন। তাই,Freelancing কাজের চাহিদা দিনে-দিনে ব্যাপক হারে বাড়ছে। আর, এই চাহিদার পরিধিতে ফ্রিল্যান্সিং কাজ শিখে আপনি সহজেই নিজেকে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন। এমনকি, আপনি মোবাইল থেকে ফ্রিল্যান্সিং শেখার অনেক সহজ এবং বিনামূল্যের উপায় পাবেন। মোবাইল থেকে শেখার জন্য আপনাকে কিছু খরচ করতে হবে না বা কোথাও যেতে হবে না।

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শেখার উপায়গুলো কি কি?

ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে প্রথমেই যে বিষয় গুলো আমাদের মাথায় রাখতে হবে,এটি আপনার দক্ষতাকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে অর্থ উপার্জনের জায়গা। এখানে আমাদের টার্গেটই থাকবে যে নিজেদের লেখার দক্ষতা, কথা বলার দক্ষতা বা পরিচালনার দক্ষতার মতো দক্ষতা ব্যবহার করে উপার্জন করা। সুতরাং, এখানে আপনাকে প্রথমে আপনার নিজের দক্ষতা শেখার উপর ফোকাস করতে হবে।

যাইহোক, সবার আগে আপনাকে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা, পছন্দ এবং দক্ষতা অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সিং চাকরির শিল্প বেছে নিতে হবে। যে বিষয়গুলো আপনাকে এই চাকরিটি বেছে নিতে সাহায্য করবে তা হল:

আপনার বয়স, বাসস্থান ও পেশা।
আপনি ফিল্ড ওয়ার্ক করতে চান নাকি বাড়ি থেকে কাজ করতে চান।
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে কোন ধরণের কাজ গুলোর সবথেকে বেশি চাহিদা ।
আপনার অধ্যয়ন বা শিক্ষাগত পটভূমি (স্ট্রিম/স্নাতক/অনার্স/মাস্টার্স)।
আপনার কি ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য সেটআপ আছে (যেমন ইন্টারনেট সিস্টেম, স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ইত্যাদি)।
সসাধারণত আপনার কিছু ধরণের দক্ষতা থাকে যেমন ফটোগ্রাফি দক্ষতা, পরামর্শ দক্ষতা এবং অন্যান্য।
আপনি প্রধানত কোন ধরনের কাজ পছন্দ করেন বা আগ্রহ আছে? যেমন, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট বা ইনফ্লুয়েন্স মার্কেটিং ইত্যাদি।

আপনি উপরের বিষয়গুলোর উপর নির্ভর করে কোন ফ্রিল্যান্সিং কাজ শিখতে চান, সেটা ঠিক করুন।

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবেন?

বর্তমানে, মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্স কাজ শেখার অনেক উপায়ই রয়েছে।এছাড়াও আপনি অনেক বিনামূল্যের বা অর্থপ্রদানের ওয়েবসাইট বা অ্যাপ পাবেন যা আপনাকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিল্প-প্রয়োজনীয় কোর্স শেখাতে পারে, যেমন গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, কন্টেন্ট রাইটিং, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টিং। এমনকি, অনেক ওয়েবসাইট থেকে আপনি এই কোর্সগুলির সার্টিফিকেট, ইন্টার্নশিপ এবং কাজের অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে নামী কোম্পানিতে চাকরির জন্য আবেদন করতে পারেন।

ইউটিউব

ইউটিউব হল এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য বিনামূল্যে টিউটোরিয়াল, টিপস এবং পরামর্শ পেতে পারেন। বিভিন্ন বিষয়বস্তু নির্মাতারা তাদের ফ্রিল্যান্স কাজের অভিজ্ঞতা, মার্কেটিং এবং ক্লায়েন্ট ম্যানেজমেন্ট এখানে শেয়ার করেন। এমনকি, যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইটে নথিভুক্ত করা আপনার ফ্রিল্যান্স ক্যারিয়ারে আপনাকে সাহায্য করবে।

কোর্সেরা

কোর্সগুলি শুধুমাত্র ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্যই নয়, নিজের দক্ষতা উন্নয়ন, বিশেষায়িত কোর্স এবং ডিগ্রি কোর্সের জন্যও একটি খুব দরকারী প্ল্যাটফর্ম। এখানে এছাড়াও লেখালেখি, ডিজিটাল মার্কেটিং, কোডিং এবং ওয়েব ডিজাইনিংয়ের ভালো ফ্রিল্যান্সিং কোর্স রয়েছে। এবং, ৪ সপ্তাহ থেকে ৪মাস পর্যন্ত বিভিন্ন কোর্স এবং ক্লাস রয়েছে। এমনকি, বিশ্বের সেরা সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনলাইন ডিগ্রি কোর্স করা সম্ভব।

আপওয়ার্ক লার্নিং সেন্টার

ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে শেখার পাশাপাশি আপওয়ার্কে বিভিন্ন ব্লগও পাবেন। যা আপনাকে সরাসরি আপনার ক্লায়েন্ট খোঁজা থেকে শুরু করে প্রজেক্ট পেতে গাইড করবে। এই ধরণের কোর্স থেকে আপনি আপনার কাজের বাজার মূল্যের পাশাপাশি পোর্টফোলিও ডিজাইন সম্পর্কে ধারণা পাবেন।

ফাইভার লার্ন

ফাইভার লার্ন অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্মটি উদ্যোক্তা এবং ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা শেখার ব্যবস্থা। বিশেষ করে, মার্কেটিং, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইনিং, বিজনেস, প্রোগ্রামিং এবং ভিডিও ও ফটোগ্রাফির সবগুলো দারুণ কোর্স রয়েছে। এছাড়াও, এর ওয়েবসাইটের ফ্রিল্যান্সিং বিভাগে বিভিন্ন ফ্রি এবং পেইড ভিডিও টিউটোরিয়াল রয়েছে।

এডেক্স

আপনি যদি কপিরাইটিং, ডেটা সায়েন্স, কোডিং, একাডেমিক রাইটিং, ভিডিও এডিটিং এর মত ক্যারিয়ারে আগ্রহী হন, তাহলে আপনি Edex এ ফ্রিল্যান্সিং কোর্সগুলিও দেখতে পারেন। এখানে সারা বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় কোর্স আছে. এই ওয়েবসাইট আপনি ফ্রিল্যান্সিং প্রোফাইলের জন্য সেরা পেশাদার সিভিও তৈরি করতে পারেন। এখানেও বিনামূল্যে এবং অর্থ প্রদানের উভয় কোর্স রয়েছে।

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা কম্পিউটার বা ল্যাপটপের মালিক নন কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনলাইনে কাজ করে নিয়মিত অর্থ উপার্জনের কথা ভাবছেন।চিন্তার কোন কারণ নেই কারণ আপনি আপনার স্মার্টফোন ব্যবহার করে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং কাজ শিখতে পারেন এবং সেই কাজগুলো করে নিয়মিত আয় করতে পারেন। মোবাইলে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং কাজ করা যায়। যেমন, কন্টেন্ট রাইটিং, ভয়েস ওভার, ট্রান্সলেশন ইত্যাদি কিন্তু শুরুতে আপনাকে অবশ্যই ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান থাকতে হবে।

মোবাইল ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে আমাদের আজকের আটিকেলটি আপনার কেমন লেগেছে তা আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। এছাড়াও, নতুন তথ্য-প্রযুক্তি সম্পর্কে সব ধরণের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং প্রয়োজনীয় টিপস এবং কৌশলগুলো পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

ফ্রিল্যান্সিং