বিকাশ একাউন্ট লেনদেন বন্ধ হয়ে গেলে কি করবেন?

মোবাইল ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে বিকাশ নিজেকে শীর্ষ স্থানীয় পর্যায়ে নিয়ে গেছে। মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করেন কিন্তু বিকাশ সম্পর্কে জানেন না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। বিকাশ একাউন্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু ব্যবহারকারী বিকাশ একাউন্ট লেনদেন বন্ধ হয়ে যাবার ঝামেলায় পড়ে।
বিকাশ তাদের ব্যবহারকারীদের একাউন্টে কিছু নির্দিষ্ট কার্যকলাপ লক্ষ করলে সাময়িক সময়ের জন্য তাদের বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করে দেয়। বিকাশ মূলত একাউন্ট এবং ওই ব্যবহারকারীর সুরক্ষার কথা চিন্তা করে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করে দেয়। আপনি যদি বিকাশ ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার একাউন্টে যেসকল কার্যকলাপ করলে একাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে সেগুলো সম্পর্কে অবশ্যই জানা প্রয়োজন। আজকের পোস্টে জানবো কেন বিকাশ একাউন্ট সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায় এবং বন্ধ হলে কি করতে হবে তা বিস্তারিত আলোচনা করব।

বিকাশ একাউন্ট সাময়িকভাবে কেন বন্ধ হয়ে যায়?

যখনই বিকাশ মনে করে যে তাদের একটি একাউন্ট থেকে অস্বাভাবিক কোনো কার্যক্রম বা লেনদেন হচ্ছে, তখনই বিকাশ থেকে ওই একাউন্টির লেনদেন বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে একাউন্টের লেনদেন সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করা হয়। মূলত বিকাশের কাস্টমারের নিরাপত্তার জন্যই এই কাজটি করা হয়। এটি গ্রাহকের কিছুটা অসুবিধার কারণ হতে পারে, তবে এটি তার একাউন্ট নিরাপদ রাখতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বিকাশ একাউন্ট ব্যবহার করার সময় আমরা অনেক কাজ বুঝে বা না বুঝে করে থাকি। আমরা মনে করি তাতে আমাদের একাউন্টের উপর কোনোভাবেই প্রভাব পড়বে না। কিন্তু অনেকেরই জানা নেই যে কোনো কাজে বিকাশ থেকে একাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে। আপনাদের সুবিধার্থে সেসব কাজ সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-

অস্বাভাবিক লেনদেন সম্পন্ন করার জন্য

বিকাশ একাউন্ট অনেক সময় হ্যাক কিংবা বিকাশ প্রতারকের হাতে পড়ে যায়। এমন অবস্থায় ওই সকল অসাধু ব্যক্তি অতি দ্রুত সকল টাকা অন্য বিকাশ একাউন্টে পাঠানোর চেষ্টা করে। বিকাশ যদি এসকল অস্বাভাবিক লেনদেন লক্ষ করে তাহলে আপনার একাউন্টের সুরক্ষার খাতিরে একাউন্ট বন্ধ করে দিতে পারে। বিকাশ প্রতারক ছাড়াও সাধারণ ব্যবহারকারীরাও যদি অস্বাভাবিক ভাবে বিকাশ থেকে লেনদেন করতে থাকে তাহলেও বিকাশ কর্তৃপক্ষ ওই ব্যবহারকারীর একাউন্ট সাময়িক বন্ধ করে দিতে পারে।

পরপর তিন বার ভুল পিন প্রদান করলে

আমরা অনেক সময় বিকাশ একাউন্টের পিন ভুলে গেলে বিভিন্ন পিন দিয়ে বিকাশ একাউন্টে প্রবেশ করার চেষ্টা করে থাকি। কিন্তু আমাদের বিকাশ একাউন্ট সচল রাখার জন্য এটা করা মোটেই উচিত নয়। বিকাশের পাসওয়ার্ড ২ বারের বেশি ভুল হলে, সঠিক পিন না জেনে তৃতীয়বার চেষ্টা করা ঠিক নয়। কেননা বিকাশে পর পর তিন বার ভুল পিন প্রদান করলে বিকাশ সেই একাউন্টটি লক করে দিতে পারে। কেউ বিকাশ একাউন্টের পাসওয়ার্ড পর পর তিন বার ভুল দেওয়ার, মানে হতে পারে যে কোনো অসাধু ব্যক্তি আপনার বিকাশ একাউন্টে প্রবেশ করার চেষ্টা করছে। সে কারনে একাউন্টের নিরাপত্তার স্বার্থে এমন পরিস্থিতিতে বিকাশ কর্তৃপক্ষ ওই একাউন্ট সাময়িক বন্ধ করে দিতে পারে।

অল্প সময়ের মধ্যে একই বিকাশ একাউন্টে একাধিক টাকা পাঠালে

আপনি যদি ১৫ মিনিটের মধ্যে একই বিকাশ একাউন্ট থেকে একাধিক বার সেন্ড মানি করেন তাহলে বিকাশ কর্তৃপক্ষ আপনার একাউন্ট সাময়িক সময়ের জন্য লেনদেন বন্ধ করে দিতে পারে। এমনকি অল্প সময়ের মধ্যে একই নাম্বারে একাধিকবার রিচার্জ করলেও বিকাশ লেনদেন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

বিকাশ একাউন্ট বন্ধ হয়ে গেলে করণীয় কি?

বিকাশ একাউন্ট কোনো কারণে বন্ধ হয়ে গেলে, আপনি বিভিন্ন উপায়ে এটি পুনরায় চালু করতে পারবেন। বিকাশ একাউন্ট বন্ধ হয়ে গেলে কীভাবে পুনরায় সক্রিয় করা যায় সে সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হল:

বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে কলের মাধ্যমে

আপনার বিকাশ একাউন্টে যেকোনো প্রকার সমস্যা সহ একাউন্ট বন্ধ হয়ে গেলে সর্বপ্রথম আপনি বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে কল করতে পারেন। বিকাশের কাস্টমার কেয়ারের নাম্বার হলো - ১৬২৪৭

আপনি যেকোনো মোবাইল অপারেটর থেকে ১৬২৪৭ নাম্বারে কল করে বিকাশ প্রতিনিধিদের কাছে আপনার সমস্যা ব্যাখ্যা করতে পারেন। আপনার সমস্যা শোনার পরে বিকাশ প্রতিনিধি আপনার সমস্যা দূর করার জন্য আপনার কাছে প্যয়োজনীয় তথ্য জানতে চাইবে। তথ্য হিসেবে বিকাশ প্রতিনিধিরা আপনার নিজের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম্বার কিংবা আপনার বিকাশ একাউন্টের ব্যালেন্স সম্পর্কে জানতে চাইতে পারে। আপনি আপনার সকল তথ্য সঠিক ভাবে প্রদান করতে পারলে বিকাশ কর্তৃপক্ষ আপনার বন্ধ হয়ে যাওয়া একাউন্ট পুনরায় চালু করে দিবে।

বিকাশের লাইভ চ্যাটে যোগাযোগের মাধ্যমে

বিকাশ কাস্টমার কেয়ার ছাড়াও আপনি চাইলে বিকাশ লাইভ চ্যাটে আপনার সমস্ত সমস্যার রিপোর্ট করতে পারেন। বিকাশ আপনার সমস্যা গ্রহন করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনার সমস্যা সমাধান করার জন্য আপনাকে কল করবে। তাহলে আপনি আপনার সমস্যার সঠিক সমাধান করতে পারবেন।

কাস্টমার কেয়ারে ভিজিটের মাধ্যমে

আপনি চাইলে বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে সশরীরে গিয়ে আপনার সমস্যার সমাধান করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার বিকাশ একাউন্টের সাথে সংযুক্ত করা ন্যাশনাল আইডি সহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নিয়ে যেতে হবে। আপনার বিকাশ একাউন্ট যদি অন্য কারো জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে খোলা হয়ে থাকে তাহলে ওই ব্যক্তির ভোটার আইডি কার্ড সহ ওই ব্যক্তিকে কাস্টমার কেয়ারে নিয়ে যেতে হবে।

বিকাশ একাউন্টে লেনদেন সাময়িক বন্ধ হওয়া অসম্ভব কিছু না। বড় কোনো সমস্যা না হলে স্থায়ীভাবে একাউন্ট বন্ধ করা হয় না। আর এই সাময়িক বন্ধ করা হয় গ্রাহকের একাউন্টের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে। কোনো অস্বাভাবিক লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহকের একাউন্ট রক্ষা করতে বিকাশ এই পদক্ষেপ নেয়।

আপনার একাউন্ট যদি সাময়িক বন্ধ হয়ে যায় তবে খুব বেশি একটা চিন্তার বিষয় নয়। এই বিষয়ে বিকাশ হেল্প লাইনে যোগাযোগ করলে। বিকাশ কর্তৃপক্ষ আপনার সমস্যার সমাধান করে দিবে। বিকাশের একাউন্ট বন্ধ কেন হয় এবং হয়ে গেলে আপনার করণীয় কি এ সম্পর্কে আমাদের এই পোষ্টটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারবেন এবং আটিকেলি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। নিত্য নতুন টেকনোলজি বিষয়ক পোষ্ট এবং বিভিন্ন ধরনের টিপস পেতে আমাদের এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জরিপ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url