গর্ভবতী ভাতা পাওয়ার সহজ নিয়ম

অনেক পরিবারে অর্থের অভাবে শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ব্যাহত হয়ে থাকে।শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ যাতে ব্যাহত না হয় এর জন্য সরকার গর্ভবতী মায়েদের জন্য গর্ভবতী ভাতা প্রচলন করেন। কিন্তু অনেকেরই গর্ভবতী ভাতা বিষয়ে ধারণা নেই। আজকের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন গর্ভবতী ভাতা পাওয়ার নিয়ম, গর্ভবতী ভাতা পাওয়ার যোগ্যতা, গর্ভবতী ভাতা অনলাইন আবেদন ও কত মাস পর পর গর্ভবতী ভাতা দেওয়া হয়ে থাকে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ-

মাতৃত্বকালীন ভাতা কিভাবে পাওয়া যায় /গর্ভবতী ভাতা পাওয়ার নিয়ম

সরকার দীর্ঘদিন ধরে গর্ভবতী মায়েদের গর্ভবতী ভাতা প্রদান করছেন। বাংলাদেশ সরকার মাসিক ৮০০ টাকা হারে প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর চারবার বা ২৪ মাস ভাতা প্রদান করে থাকে। গর্ভবতী ভাতা বাস্তবায়ন হয়েছে ২০১৫ সাল থেকে। গর্ভবতী ভাতা পাওয়ার জন্য কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে যেগুলো গর্ভবতী মহিলাদেরকে মানতে হয়। নিচে গর্ভবতী ভাতার জন্য কি কি লাগে তা উল্লেখ করা হলো:-
  • গর্ভবতী মহিলার বয়স অবশ্যই কমপক্ষে বিশ বছর বা তার উপরে হতে হবে।
  • মোট মাসিক ইনকাম ২,০০০ টাকা নিম্নে হতে হবে।এক্ষেত্রে দরিদ্র ও প্রতিবন্ধীরা বেশি অগ্রাধিকার পাবেন। যারা অন্যের জায়গায় বাস করে বা বসত বাড়ি নেই তারা অগ্রাধিকার বেশি পাবে ।
  • নিজের বা পরিবারের কোনো মৎস্য চাষের পুকুর অথবা জমি নেই।
  • উপকার ভোগী নির্বাচনের সময় অর্থাৎ জুলাই মাসে উপকার ভোগীকে গর্ভবতী হতে হবে।
  • প্রথম ও দ্বিতীয় সন্তান গর্ভাবস্থায় বা জন্মের দুই বছরের মধ্যে মারা গেলে তৃতীয় বার গর্ভধান কারলে ভাতা প্রাপ্ত হবেন।
  • একজন ভাতাভোগী জীবনে একবার দুই বছর সময়কালের জন্য মাতৃকাল ভাতা পাবেন।তাছাড়া কোন কারনে সন্তানের মৃত্যু হলে অথবা গর্ভপাতের কারণে নির্দিষ্টচক্র অসম্পূর্ণ থাকলে তিনি পুনরায় যদি গর্ভবতী হয়ে থাকে তাহলে পরবর্তীতে দুই বছরে মাতৃত্ব ভাতা প্রাপ্ত হবেন।
উপরের শর্তগুলোর মধ্যে যদি পাঁচটি শর্ত পূরণ হয়ে থাকে তাহলে আবেদনকারীর নাম প্রাথমিক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং এক্ষেত্রে দারিদ্র্য ব্যক্তিরা বেশি অগ্রাধিকার পাবেন। তাহলে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আবেদনকারী তথ্য mis অনলাইন সফটওয়্যারে এন্ট্রি করতে পারবেন। 

গর্ভবতী ভাতা পাওয়ার জন্য কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন 

গর্ভবতী ভাতা পাওয়ার জন্য কোন ধরনের কাগজপত্র প্রয়োজন হবে বাকি কি ডকুমেন্ট লাগবে এটা সম্পর্কে অবশ্যই আবেদনকারী কে জানতে হবে। নিচে গর্ভবতী ভাতা পাওয়ার জন্য যে সকল কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে তা উল্লেখ করা হলোঃ-
  • আবেদনপত্রের সাথে তিন কপি ছবি লাগবে। নাগরিক সনদ ও জাতীয় পরিচয় পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি সংযুক্ত করতে হবে।
  • উপজেলা স্বাস্থ্য অফিস থেকে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কর্তৃক গর্ভবতী প্রসূতির ১ কপি প্রত্যয়ন পত্র লাগবে।
  • আবেদনকারী ব্যক্তির অবশ্যই নিজের পছন্দের নামের ডিজিটাল অনলাইন ব্যাংকে একাউন্ট থাকতে হবে এবং মোবাইল নাম্বার থাকতে হবে।
সাধারণত এই সকল ডকুমেন্টগুলো থাকলেই গর্ভবতী ভাতার জন্য অনলাইন আবেদন পত্র সম্পূর্ণ করা যায়।

গর্ভবতী ভাতা কত টাকা

গর্ভবতী ভাতা কত টাকা বা গর্ভবতী ভাতার মাধ্যমে মোট কত টাকা দেওয়া হয়ে থাকে এই নিয়ে অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। গর্ভবতী ভাতা প্রাপ্তদের সাধারণত মাসিক ৮০০ টাকা হারে প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর চারবার পাঁচ ২৪ মাস ভাতা প্রদান করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ এই সময়কালীন গর্ভবতী ব্যক্তি ৩২০০ টাকা পেয়ে থাকে।
এক্ষেত্রে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আবেদনকারী তথ্য ও আবেদন সংগ্রহ করে চেয়ারম্যানের নিকট হতে স্বাক্ষর ও সিল গ্রহণ করে থাকেন। তারপরে উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব কাগজপত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন এবং উপজেলা কমিটির সভাপতির আবেদনে মঞ্জুরী প্রদান করে থাকেন। 

গর্ভকালীন গর্ভবতী ভাতার আবেদন ফরম

দরিদ্র মাদের গর্ভকালীন ভাতা পাওয়ার জন্য উপজেলা বরাবর তাদেরকে আবেদন করতে হবে। ইউনিয়ন কমিটির চেয়ারম্যান, উপজেলা সদস্য সচিব ও সভাপতি এই সংক্রান্ত আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই করার মাধ্যমে মঞ্জুরী আদেশ প্রদান করে থাকেন। এর জন্য অবশ্যই গর্ভবতী ভাতার আবেদন ফরম আমাদের প্রয়োজন হয়ে থাকে। যারা গর্ভবতী ভাতার আবেদন ফরম ডাউনলোড করতে চান তারা নিচের ডাউনলোড বাটন থেকে গর্ভবতী ভাতার জন্য আবেদন ফরম ডাউনলোড করে নিতে পারেন। 

গর্ভবতী ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম

বর্তমানে গর্ভবতী ভাতার জন্য ঘরে বসেই অনলাইন এর মাধ্যমে আবেদন করা যায়। অনলাইনে গর্ভবতী ভাতা আবেদন প্রক্রিয়া খুবই সহজ এবং যেকোনো ব্যক্তি চাইলে খুব সহজে আবেদন করতে পারবেন।আবেদনকারী ব্যক্তি গর্ভবতী ভাতার জন্য https://www.mygov.bd/ এই ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করে খুব সহজে আবেদন করতে পারবেন। গর্ভবতী ভাতার জন্য অনলাইনের মাধ্যমে কিভাবে আবেদন করে সেটি জানার জন্য নিচের ভিডিওটি আপনারা সম্পূর্ণ দেখতে পারেন।

শেষ কথা

আশা করি আজকের আটিকেলটি যারা পড়েছেন তারা গর্ভবতী ভাতা কিভাবে পাবেন বা গর্ভবতী ভাতা পাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা পেয়েছেন। তারপরেও যদি এই বিষয় সম্পর্কে কোন ধরনের কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনার মূল্যবান প্রশ্নটির খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে উত্তর প্রদান করার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জরিপ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url