নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম : বাংলাদেশে অনেক লোক রয়েছে। যারা সময় মত নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে পারেননি। এমনকি তারা সঠিকভাবে জানেন না। নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম কি ?
এছাড়া নতুন ভোটার হতে হলে, প্রয়োজনীয় কি ধরণের কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট লাগবে, সে বিষয়েও জানে না। বর্তমান সময়ে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম অনেক সহজ। তবুও অনেকে সঠিক ভাবে আবেদন করতে পারে না। যার ফলে ভোগান্তির শিকার হয়।

তাই আজ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের জানিয়ে দেবো নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম এবং ভোটার আইডি কার্ড করতে কি কি কাগজপত্র লাগে সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য। তাই আপনি যদি নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেতে চান। তাহলে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে নতুন ভোটার

দেশের প্রতিটি নাগরিকের ভোটার হওয়া মৌলিক অধিকার। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন সময়ে,ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

এই সময় তথ্য সংগ্রহকারীর মাধ্যমে নতুন ভোটার হওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের তথ্য নিয়ে ২ নং ফরমে নতুন ভোটার নিবন্ধন করে নেয়া হয় এবং সুবিধা মতো জায়গায় ভেনু তৈরি করে ডাটা এন্ট্রির কাজ করা হয়।

যারা নতুন ভোটার নিবন্ধনের যোগ্য প্রার্থী। তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাবমিট করে খুব সহজেই এই সময় ভোটার হতে পারে।

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য আবেদনকারীর বয়স কত হতে হবে ?

যারা নতুন ভোটার নিবন্ধন অথবা নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে চান তাদের জন্ম তারিখ ০১-০১-২০০৪ ইং বা তার আগে হতে হবে। এতে করে আপনার বয়স ১৮ বছরের কম বেশি যাই হোক না কেন কোন সমস্যা হবে না।
কিন্তু ১৮ বছরের কম হলে আপনি নতুন ভোটার আইডি কার্ড পাবেন কিন্তু নির্বাচনের সময় ভোট দিতে পারবেন না। আপনার বয়স যখন ১৮ বছর হবে তখন এমনিতে ভোটার তালিকায় নাম চলে যাবে এবং আপনারা ভোট দিতে পারবেন এবং দেশের সব কার্যক্রমে আপনার ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন।

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

আপনার যদি নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম জানতে চান তাহলে আপনারা ২ ভাবে আবেদন করতে পারবেন।
যেমন-

০১. উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে

আপনারা নতুন ভোটার হতে চাইলে, সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ২ নং ফরম সংগ্রহ করতে হবে। ভোটার নিবন্ধন ফরম পূরণ করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ফর্ম এর সাথে পুরোন করে, অফিসে জমা দিতে হবে।

প্রতিটি ২নং নতুন ভোটার হওয়ার ফরমে একটি করে, ইউনিক নাম্বার দেওয়া থাকে। যার ফলে আবেদনকারীর তথ্যাদি যাচাই করা হয়। তাই ভোটার নিবন্ধন ফরম ফটোকপি করে, একাধিক ব্যক্তি ব্যবহার করতে পারবেন না। এছাড়া কোন ফটেকপি এর দোকান থেকে ভোটার নিবন্ধন ফরম সংগ্রহ করবেন না।
আবেদন করার পরে উপজেলা নির্বাচন অফিসার এবং রেজিস্ট্রেশন অফিসার আবেদনটি যাচাই করে, সকল তথ্য এবং ডকুমেন্ট সঠিকভাবে পেলে নতুন ভোটার করার অনুমতি দিবে।

তাই আপনি যদি নতুন ভোটার হতে চান? তাহলে সহজেই উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সাবমিট করে সহজে নতুন ভোটার হতে পারবেন।

02. অনলাইনের মাধ্যমে

আপনি যদি নতুন ভোটার হওয়ার নিয়ম খুজে থাকেন তাহলে আপনারা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট services.nidw.gov.bd এই ঠিকানাতে গিয়ে।

নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন জমা দিলে, ২ নং ভোটা নিবন্ধন ফরম ডাউনলোড হয়। সেটি প্রিন্ট করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আবেদন পত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হয়।

উপজেলা নির্বাচন অফিসার এবং রেজিস্টার অফিসার আপনার ভোটার আইডি কার্ডের আবেদন এবং দাখিলকৃত কাগজপত্র যাচাই করে, সকল তথ্য সঠিক মনে করলে। নতুন ভোটার হওয়ার অনুমতি প্রদান করে।

নতুন ভোটার নিবন্ধন ফরমের গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ

নতুন ভোটার আইডি কার্ড হওয়ার জন্য নির্বাচন অফিস থেকে ফর্ম নিয়ে আবেদন করবেন আর অনলাইনে আবেদন করবেন উভয় ক্ষেত্রে একটি কমন এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে।

সেটি হচ্ছে ২ নং নতুন ভোটার আইডি কার্ড নিবন্ধন ফরমের পেছনের পাতায় ৩৪ নং ক্রমিকে শনাক্তকারী জাতীয় পরিচয় পত্র এনআইডি কার্ড নম্বর এবং ৩৫ নম্বর ক্রমিকে স্বাক্ষর এই দুটি জায়গায় আপনার প্রতিবেশী বা অন্য যে, কোন একজন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার লিখতে হবে এবং তার স্বাক্ষর নিতে হবে।

বাব ও মা এবং স্বামী- স্ত্রীর জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার না ব্যবহার করাই ভালো কারণ তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার ফর্মের প্রথম পাতায় লেখা থাকবে।

এছাড়া, ফরমে ৪০ ক্রমিকে যাচাইকারীর নাম উল্লেখ করতে হবে। যাচাইকারী অবশ্যই একজন জনপ্রতিনিধি হইতে হবে। মনে করুন- চেয়ারম্যান/ ভাইস চেয়ারম্যান/ মেম্বার/ মহিলা মেম্বার/ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইত্যাদি।
যাচাইকারীর নামের জায়গায় কোন সাধারণ মানুষের নাম না লেখাই ভালো। এতে নতুন ভোটার আবেদন বাতিল হয়ে যেতে পারে।

নতুন ভোটার আইডি কার্ড আবেদনপত্রের ৪১ নম্বর ক্রমিকে যাচাই কারীর জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার লিখতে হবে এবং ৪২ নং ক্রমিকে যাচাইকারী স্বাক্ষর নিতে হবে।

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে ?

আপনি যদি নতুন ভোটার হতে চান, তাহলে আপনার বিভিন্ন ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে। সেই অনুযায়ী জানিয়ে দেবো। ভোটার হতে কি কি লাগে। নতুন ভোটার হতে যা যা লাগে সেগুলো হলো-
  • অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ- যেমন: এসএসসি অথবা সমমান সনদ। এক্ষেত্রে আপনারা শিক্ষাগত যোগ্যতা সর্বশেষ সনদ জমা দিতে পারেন। আর যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ নেই তাদের প্রয়োজন নেই।
  • বাবা এবং মার জাতীয় পরিচয় পত্র কার্ডের ফটোকপি।
  • বিবাহিত হলে স্বামী-স্ত্রীর জাতীয় পরিচয় পত্র ফটোকপি এবং কাবিননামা সনদ।
  • র*ক্তের গ্রুপ পরীক্ষার রিপোর্ট।
  • চেয়ারম্যান/ পৌরসভা মেয়র/ ওয়ার্ড নাম্বার/ ওয়ার্ড কাউন্সিলর কর্তৃক প্রত্যয়ন পত্র লাগবে।
  • বাংলাদেশের নাগরিকত্বের সনদপত্র।
  • পানির বিল, বিদ্যুৎ বিল, গ্যাসের বিল- বাড়ির যে কোন ব্যক্তির হলেই হবে।
  • চৌকিদারী ট্যাক্স রশিদ / পৌর করের রশিদ / বাড়ী ভাড়ার রশিদ। বাড়ির যে কোন ব্যক্তির হলেই হবে।
  • আগের কখনও ভোটার আইডি কার্ড হয়নি। মর্মে অঙ্গীকারনামা যাদের বয়স অনেক বেশি তাদের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক।
  • পাসপোর্ট এর কপি। যদি থাকে।
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কপি। যদি থাকে।
আপনারা উপরে যে কাগজপত্র গুলোর তালিকা দেখতে পাচ্ছেন। এর মধ্যে যে সকল কাগজপত্র আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। সেগুলো আবেদন পত্রের সাথে জমা দিতে হবে তাছাড়া সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন অফিসারের পরামর্শ অনুযায়ী কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন অফিসার আবেদনটি অনুমোদন দেওয়ার পরে আপনার ছবি, স্বাক্ষর, ১০ আঙ্গুলের ছাপ এবং চোখের আইরিশ স্ক্যান করে, নেওয়া হবে। তারপরে আবেদন পত্রের নিচের অংশ টুকু কেটে আপনাকে প্রদান করা হবে। এই কেটে দেওয়া অংশকে ভোটার নিবন্ধন স্লিপ বলা হয়। সকলের উচিত ভোটার নিবন্ধন স্লিপটি ভালোভাবে সংরক্ষণ করে রাখা।

অনেকে অসাবধানতার কারণে ভোটার নিবন্ধন স্লিপ হারিয়ে ফেলে। যার ফলে, তাকে পরবর্তীতে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। আপনারা যারা উপরের তথ্যগুলো অনুসরণ করে কাজ করতে পারবেন তারা নতুন ভোটার সহজেই হতে পারবেন।

শেষ কথাঃ

এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাকে জানানো হলো নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে। আপনি যদি নতুন ভোটার হতে চান? তাহলে আপনার নিজ উপজেলা নির্বাচন কমিশনের অফিসে গিয়ে এবং অনলাইনের মাধ্যমে নতুন ভোটার আইডি কার্ড এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আমাদের আর্টিকেলটি আপনার কাছে শেষ পর্যন্ত পড়ে কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। আর নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে আপনার বন্ধুদের জানাতে শেয়ার করে দিবেন। এছাড়া আমাদের এই ওয়েবসাইট থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র এনআইডি কার্ড সংক্রান্ত নতুন নতুন তথ্য জানতে নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জরিপ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url