হোস্টিং কি? হোস্টিং কত প্রকার ও কি কি?

হোস্টিং কি-কোনো ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য হোস্টিং এবং ডোমেইন এর প্রয়োজন হয়। আগের আর্টিকেল ডোমেইন নেম কি এই সম্পর্কে বলেছিলাম। আজকের আর্টিকেলে হোস্টিং কি, ওয়েব হোস্টিং কি, হোস্টিং কত প্রকার ও কি কি এবং হোস্টিং এর দাম কত এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
এইজন্য, আপনি যদি ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরির জন্য Hosting কিনতে চান। তাহলে আজকের আর্টিকেল থেকে হোস্টিং এবং হোস্ট সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন।

পোস্ট সূচিপত্র:

হোস্টিং কি? (What is hosting)

 হোস্টিং (Hosting) হলো এমন একটি সার্ভিস যার মাধ্যমে যেকোনো ব্লগ বা ওয়েবসাইট ইন্টারনেট দুনিয়াতে চালু করতে পারি। আমরা যখন কোনো hosting provider থেকে হোস্টিং কিনে থাকি। তখন ইন্টারনেটে web server এ আমাদের কিছু জায়গা দেওয়া হয়।

আর এই web server এমন একটি কম্পিউটার যেখানে সব সময় ইন্টানেটের সাথে জড়িত থাকে। এই ওয়েব সার্ভারে কিনে নেওয়া জায়গাতে আমরা যখন আমাদের ব্লগ বা ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে ভিডিও, অডিও, ফাইল, ইমেজ, আর্টিকেল পাবলিশ করি তখন সেগুলো ওয়েব সার্ভারে জমা হতে থাকে।

ওয়েব সার্ভার সব সময় ইন্টারনেটের সাথে জড়িত থাকার জন্য, আমাদের ব্লগ বা ওয়েবসাইটে যে কেও ইন্টারনেটের মাধ্যমে মোবাইল বা কম্পিউটারে access করতে পারে। তবে, এর জন্য আমাদের একটি ডোমেইন নাম কিনে নিতে হয় এবং ডোমেইন নেম কে আমাদের ওয়েব সার্ভারের সাথে কানেক্ট করতে হয়।

আপনার ওয়েব সার্ভারের সাথে ডোমেইন নাম কানেক্ট করার ফলে যে কেউ ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত যেকোনো মোবাইল বা কম্পিউটার দ্বারা আপনার ওয়েব সার্ভারে থাকা ভিডিও, অডিও, ইমেজ, আর্টিকেল সব কিছু দেখতে পারে। আর এই মাধ্যমকে বলা হয় ব্লগ বা ওয়েবসাইট, যেখানে আপনি সব কিছুই দেখতে পাবেন। যেগুলো সেই ওয়েবসাইটের সার্ভারে আপলোড করা হয়েছে।

আশাকরি,বুঝতে পারছেন হোস্টিং কাকে বলে। Hosting এমন একটি জায়গা যেটা অবশ্যই আপনাকে কিনে নিতে হবে, নিজের ব্লগ বা ওয়েবসাইটকে ইন্টারনেটে সক্রিয় রাখার জন্য।

হোস্টিং কাকে বলে?

হোস্টিং হল এক ধরনের ওয়েব সার্ভার। যেখানে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট বা ব্লগের সমস্ত ডাটা স্টোর করা হয়। কোনো ব্যবহারকারী নির্দিষ্ট ডোমেন নেম ইন্টারনেটে সার্চ করলে, হোস্টিং এর মাধ্যমে ওই ওয়েবসাইট বা ব্লগের সমস্ত ডাটা গুলো ভিজিটর দেখতে পারে। ডোমেইন এবং হোস্টিং এর কানেকশনের মধ্য দিয়ে কোন ওয়েবসাইট, ইউজার এর সামনে ফুটে ওঠে।

হোস্ট কি বা হোস্ট কাকে বলে?

একটি কম্পিউটার যখন নেটওয়ার্কের মধ্যে কানেক্ট হয় তখন তাকে হোস্ট বলা হয়। কখনো কখনো কম্পিউটার বা অন্য যে কোন ডিভাইস নেটওয়ার্কের সাথে কানেক্ট হলে তাকেও হোস্ট বলা হয়ে থাকে। সেটি মোবাইল, ট্যাবলেট বা অন্য যে কোন ডিভাইস হতে পারে। হোস্ট বিভিন্ন ধরনের হয়। যেমন: নেটওয়ার্ক হোস্ট, ওয়েব হোস্ট ইত্যাদি।

একটি হোস্ট কে অন্য হোস্ট এর সাথে কানেক্ট করার জন্য নেটওয়ার্ক এর প্রয়োজন হয় এবং নেটওয়ার্কের সাহায্যে এক বা একাধিক হোস্ট এর মধ্যে কানেকশন তৈরি করে কমিউনিকেশন করা হয়। ডোমেইন এবং হোস্টিং হলো এক ধরনের ওয়েব হোস্ট। ওয়েব হোস্ট বিভিন্ন ধরনের হোস্টিং সার্ভারকে দেখাশোনা করে এবং বিভিন্ন কাস্টমারদের হোস্টিং সার্ভিস প্রোভাইড করে।

উদাহরণস্বরূপ: যখন কোন ডোমেইনকে, হোস্টিং এর সাথে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কানেক্ট করা হয় তখন এটি ওয়েব হোস্ট এর মধ্যে পড়ে।

হোস্টিং কত প্রকার?

হোস্টিং কাকে বলে জানার পরে এবার আমাদের জানতে হবে হোস্টিং কত প্রকার। ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তা security, speed এর উপর নির্ভর করে অনেক রকমের হোস্টিং আমরা ব্যবহার করতে পারি।

তাছাড়া, হোস্টিং অনেক প্রকার রয়েছে। যে হোস্টিং গুলো সব চেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় সেগুলোর নাম আমি নিচে বলে দিয়েছি। ব্লগ বা ওয়েবসাইটে যেগুলোকে বেশি ব্যবহার হয় সেগুলো হলো- 
  • Share hosting (শেয়ার হোস্টিং)
  • V.P.S – virtual private server(ভার্চুয়াল প্রাইভেট হোস্টিং)
  • Dedicated hosting (ডেডিকেটেড হোস্টিং)
  • Cloud hosting (ক্লাউড হোস্টিং)
  • Managed Hosting (পরিচালিত হোস্টিং)
  • Reseller Hosting (রিসেলার হোস্টিং)
তাহালে চলুন নিচে থেকে উপরের সব গুলো হোস্টিং সার্ভারের প্রকার সম্পর্কে বিস্তরিতভাবে জেনে আসি।

১. share hosting (শেয়ার হোস্টিং)

শেয়ার হোস্টিং মানে হলো, ওয়েব হোস্টিং কে বলা হয় শেয়ার করা। মানে একটি ওয়েব সার্ভার অনেক গুলো ওয়েবসাইট শেয়ার করবেন। ধরুন  আপনার একটি গুদাম ঘর রয়েছে, সেখানে আপনারা ফ্যামিলির সব সদস্যরা এক সাথে শেয়ার করে বা ভাগ করে গুদাম ঘর ব্যবহার করছেন।

এখানে বোঝানো হয়েছে আপনার গুদাম ঘরটি হলো একটি ওয়েব সার্ভার (web server) এবং আপনি ও আপনার ফ্যামিলি যারা ভাগ করে ব্যবহার করছেন তারা হলো একটি একটি ওয়েবসাইট।

এতে করে আপনার লাভ হলো আপনার গুদাম ঘর ভাড়া ফ্যামিলি সবাই মিলে দিতে পারবেন। এতে আপনার টাকা কম খরচ হবে। শেয়ার হোস্টিং এর ক্ষেত্রে একটি ওয়েব সার্ভারে এক সাথে অনেক গুলো ওয়েবসাইট শেয়ার করতে পারবে এবং যার ফলে অনেক কম টাকা ব্যয় হবে।

share hosting অনেক কম টাকায় কিনতে পারবেন এবং যারা নতুন ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করে তারা প্রায় সবাই share hosting গুলো ব্যবহার করেন।

শেয়ার হোস্টিং এর লাভ

  • অনেক কম দামে কিনতে পারবেন।
  • share hosting নতুন ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জন্য সেরা হোস্টিং।
  • শেয়ার হোস্টিং এর দামের কথা বললে আপনি বাংলাদেশের টাকায় ১২০ থেকে ২০০ টাকায় মাসিক শেয়ার হোস্টিং প্যাকেজ পেয়ে যাবেন।
  • Set Up করা খুবই সোজা।
  • তাছাড়া অনেক সময় বড় বড় কোম্পানি গুলো সম্পূর্ণ ফ্রিতে share hosting গুলো দিয়ে থাকে।

২. V.P.S – virtual private server(ভার্চুয়াল প্রাইভেট হোস্টিং)

ভার্চুয়াল প্রাইভেট হোস্টিং গুলো শেয়ার হোস্টিং (share hosting) এর তুলনায় হাজার হাজার গুন ভালো। আসলে এই সার্ভার আমরা তখনই ব্যবহার করি যখন আমাদের ওয়েবসাইটে ভালো পরিমানে ভিজিটর্স আসে।

এক কথায় আমাদের ওয়েবসাইট যখন পুপলার হয়ে যায় তখন virtual private server ব্যবহার করা হয়। প্রথম অবস্থায় V.P.S ব্যবহার করার কোনো প্রয়োজন আসে না। ভিপিএস (VPS) হোস্টিং বলতে আমরা কী বুঝি? ধরুন, আপনার একটি বিল্ডিং আছে এবং বিল্ডিং এর অনেকগুলো রুম রয়েছে। ঠিক সেই ভাবে V.P.S – virtual private server(ভার্চুয়াল প্রাইভেট হোস্টিং) সার্ভার গুলো ভাগ করা হয়।

যেখানে আপনার কিনে নেওয়া রুমে শুধু আপনার ঠিক সেই ভাবে v.p.s সার্ভারে শুধুমাত্র আপনার ওয়েবসাইটের অধিকার থাকবে। এখানে আপনি যে ভাগ কিনে নিবেন সেটা শুরু আপনি নিজে ব্যবহার করতে পারবেন। এটা প্রাইভেট ওয়েব সার্ভারের মতো।  যার কারণে v.p.s হোস্টিং গুলো অনেক দ্রুত কাজ করে এবং ভিজিটর্স বা ট্রাফিক থাকার জন্য বেশ লাভজনক বলে বলা হয়।

V.P.S hosting এর লাভ

  • security হিসাবে দেখতে গেলে virtual private server সার্ভার অনেক নিরাপদ।
  • এটার কাজ করার ক্ষমতা অনেক দ্রুত হয়।
  • শেয়ার হোস্টিং থেকে অনেক গুণে বেশি ট্রাফিক বা ভিজিটর্স হাতল করতে পারবেন।
  • এই হোস্টিং এর দাম বাংলাদেশের টাকায় ১০০০ টাকা থেকে ১৪০০ টাকা মাসিক প্যাকেজে পাবেন।
  • ওয়েবসাইটের হিসাবে momory upgrade এবং ব্যান্ডউইডথ পরিবর্তন করতে পারবেন।

৩. dedicated hosting (ডেডিকেটেড হোস্টিং)

ডেডিকেটেড হোস্টিং অন্য অন্য হোস্টিং এর তুলনায় সম্পর্ন ভিন্ন। কারণ, শেয়ার হোস্টিং এর আপনি একসাথে অনেক গুলো ওয়েবসাইট শেয়ার করতে পারবেন। আবার vps server এ আপনাকে একটি ভাগ দিতে হবে। তবে, আপনি যদি ডেডিকেটেড হোস্টিং ব্যবহার করেন তাহালে সম্পূর্ণ সার্ভারটি শুধু আপনাকে দেওয়া হবে এবং এটার ভাগ আপনাকে কাউকে দিতে হবে না। এই সার্ভারে কেবল আপনার ওয়েবসাইটকে হোস্ট করা হবে।
যেমন, এখানে আপনি কেবল একটি রুম নয় বরং আপনি কেবল পুরো বিল্ডিংটা কিনে নিলেন। এতে শুধুমাত্র আপনার অধিকার থাকবে, অন্য কেউ ভাগ নিতে পারবে না। ডেডিকেটেড হোস্টিং এর ক্ষেত্রে কেবল একটি মাত্র ওয়েবসাইট হোস্ট করা থাকে বলে সেই ওয়েবসাইটটি অনেক গুনে ফাস্ট হয়। তাছাড়া নিরাপত্তার দিক থেকে ১০০% শিয়র থাকা যায়।

আপনি কেবল তখন এই হোস্টিং ব্যবহার করবেন যখন আপনার ওয়েবসাইটে প্রচুর সংখ্যাক ট্রাফিক আসতে থাকবে। আর মনে রাখবেন এই হোস্টিং এর দাম কিন্ত অনেক বেশি।

ডেডিকেটেড হোস্টিং এর লাভ

  • dedicated hosting হোস্টিং এর মাধ্যমে অনেক বেশি সংখ্যাক ভিজিটর্স হ্যান্ডেল করতে পারবেন।
  • এই ধরনের হোস্টিং অনেক নিরাপদ।
  • কার্যক্ষমতা অন্যদের থেকে অনেক গুনে বেশি।
  • ব্লগ বা ওয়েবসাইট অনেক দ্রুত বা ফাস্ট কাজ করতে সক্ষম।
  • ডেডিকেটেড হোস্টিং এর দাম অনেক বেশি, বাংলাদেশ টাকায় মাসিক ৬০০০ টাকা পড়ে যাবে।

৪. cloud hosting (ক্লাউড হোস্টিং)

বর্তমান সময়ে ক্লাউড হোস্টিং ব্লগার বা ওয়েবসাইটদের মালিকদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং ভরসার হোস্টিং সার্ভার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটার কার্যক্ষমতা ও স্পিড অনেক দ্রুত এবং নিরাপদ। ব্লগ বা ওয়েবসাইটে যখন বেশি সংখ্যাক অডিয়েন্স আসবে তখন আপনারা cloud hosting ব্যবহার করবেন।

ক্লাউড হোস্টিং এর সার্ভারে অনেক গুলো ওয়েব সার্ভার এক সাথে রাখা হয়। আপনি প্রয়োজন মতো CUP, RAM, Storage বাড়িয়ে কমিয়ে নিতে পারবেন। আপনার ওয়েবসাইটে যখন বেশি ভিজিটর্স আসবে। তখন সহজে নিজে ওয়েব সার্ভারের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে নিতে পারবেন।

আবার আপনি ইচ্ছা করলে ওয়েবসাইটের কার্যক্ষমতা কমিয়েও নিতে পারবেন। মনে রাখবেন, ক্লাউড হোস্টিং এ ওয়েবসাইট ডাউন হওয়ার সুযোগ অনেক কম থাকে। এটা অনেক বেশি পরিমানে ট্রাফিক একসাথে হ্যান্ডেল করতে পারে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও ক্লাউড হোস্টিং উপর ভরসা করতে পারবেন।

ক্লাউড হোস্টিং এর লাভ

  • সার্ভার ডাউন হওয়ার কোন ভয় থাকে খুবই কম।
  •  কার্যকারিতা অনেক বেশি উন্নত, নিজের প্রয়োজন মতো বাড়িয়ে কমিয়ে নেওয়া যায়।
  • ব্লগ বা ওয়েবসাইটে অনেক বেশি ট্রাফিক বা ভিজিটর্স হ্যান্ডেল করতে সক্ষম।
  • ক্লাউড হোস্টিং এর দাম কার্যক্ষমতা হিসাবে তেমন বেশি নয়, বাংলাদেশের টাকা হিসাবে মাসে ৬০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকার ভেতরে।
  •  ক্লাউড হোস্টিং দাম আপনার প্রয়োজনীয় CUP, RAM, Storage এই গুলোর উপর নির্ভর করে।

৫. Managed Hosting (পরিচালিত হোস্টিং)

যখন কোন কোম্পানি বা বড়  ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান যে ধরনের ওয়েব হোস্টিং ব্যবহার করে তাকে ম্যানেজ ওয়েব হোস্টিং বলা হয়।

যেমন ধরুন আমরা ব্লগ বানানোর জন্য ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করি। কিন্তু ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং নামক এক ধরনের হোস্টিং আছে যেটি ওয়ার্ডপ্রেস কোম্পানি তার ইউজার দের জন্য তৈরি করেছেন। যার মাধ্যমে যেকোনো ওয়াডপ্রেস user তার ওয়েবসাইট বা ব্লগ, ভালোভাবে Optimize এবং Rank করতে পারে।

কোনো হোস্টিং কে, কোনো কোম্পানি বিভিন্ন টুলস এর সাহায্যে নিজেই ম্যানেজ করলে তাকে ম্যানেজ ওয়েব হোস্টিং বলা হয়। এখানে নির্দিষ্ট কোম্পানি শুধুমাত্র তার ইউজারদের পরিষেবা দেবার জন্য এই ধরনের হোস্টিং তৈরি করেন। তবে কখনো কখনো বড় বড় প্রতিষ্ঠানও ম্যানেজ হোস্টিং তৈরি করে থাকে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়,ধরুন আপনার একটি নিজস্ব ফ্ল্যাট রয়েছে এবং আপনি সেই ফ্ল্যাটটি নিজেই ম্যানেজ করেছেন। যেখানে আপনি দেখছেন আপনার কাস্টমারদের কোন রকম অসুবিধা হচ্ছে কিনা এবং অসুবিধা ঠিক করার জন্য নিজেই সেই ফ্ল্যাটের দেখবার সামলাচ্ছেন।

৬. Reseller Hosting (রিসেলার হোস্টিং)

যখন কোন নির্দিষ্ট কোম্পানি থেকে একটি পুরো সিপিইউ কিনে নিয়ে সেটিকে আলাদা আলাদা ইউজারের সাথে ভাগ করে নেয়া হয় তখন তাকে রিসেলার হোস্টিং বলে। আপনি কোন নির্দিষ্ট হোস্টিং নিজের নামে কিনে সেটিকে বাকি ইউজারদের কাছে ভাড়া দিতে পারবেন।

যেহেতু এটি আপনি পুনরায় কিনে পুনরায় বিক্রি করছেন তাই এটিকে রিসেলার হোস্টিং বলা হয়। ধরুন আপনি একটি হোস্টিং কিনলেন তারপর এই হোস্টিং এর মধ্যেই VPS, Shared, Business নামক আলাদা আলাদা বিভাগে ভাগ করে আলাদা আলাদা মূল্য সেট করলেন। তারপর বিভিন্ন ইউজারদের সাথে যোগাযোগ করে বললেন যে আপনার কাছে একটি হোস্টিং আছে। আপনি সেটিকে ভাড়া দিতে চান। তখন আপনার Reseller Hosting হোস্টিং কিনতে যেসব ইউজাররা আসবে তাদের থেকে আপনি ভাড়া নিয়ে Reseller Hosting হোস্টিংটি ব্যবহার করার অনুমতি দেবেন।

উদাহরণস্বরূপ: আপনি অন্য ব্যক্তির থেকে একটি বাড়ি কিনে নিয়ে সেটাকে নিজের নামে করে অন্যদেরকে ভাড়া দিচ্ছেন।

ওয়েবসাইটের জন্য কোন হোস্টিং ব্যবহার করা ভালো হবে?

আপনি যখন একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন তখন আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটের ডাটা স্টর করে রাখার জন্য অবশ্যই হোস্টিং লাগবে। ওয়েবসাইটের জন্য কোন হোস্টিং ব্যবহার করা আমাদের জন্য বেশি ভালো হবে?

আসলে ওয়েবসাইটের জন্য কোন হোস্টিং ভালো হবে বা কেমন হোস্টিং নিবেন সেটা সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভর করে আপনার ওয়েবসাইটের উপর ভিত্তি করে। আপনি যদি ব্লগিং করার কথা চিন্তা করেন, তাহালে প্রথম দিকে শেয়ার হোস্টি ব্যবহার করুন।
আপনি অনেক কম দামে share hosting কিনতে পারবেন এবং প্রথম প্রথম আপনার ব্লগে তেমন ভিজিটর্স বা ট্রাফিক আসবে না। এরপর যখন থেকে আপনার ব্লগে বেশি পরিমানে ভিজিটরস বা ট্রাফিক আসতে শুরু করবে তখন আপনি Cloud hosting ব্যবহার করুন।

বেশি ট্রাফিক আসলে আপনি হোস্টিং এর কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে নিবেন। যার ফলে ওয়েবসাইট অনেক দ্রুত লোড নিবে এবং নিরাপত্তার দিক থেকে ভরসা করা যাবে। ক্লাউড হোস্টিং আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জন্য সব থেকে ভালো হোস্টিং বলে প্রমাণিত হতে পারে।

আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে যদি সীমাহীন ভিজিটর্স বা ট্রাফিক আসতে থাকে এবং আপনার ইনকাম যদি বেশি পরিমানে হতে থাকে তাহালে, আপনি Dedicated হোস্টিং সার্ভার ব্যবহার করতে পারেন।

কারণ, সীমাহীন ট্রাফিক Dedicated server সহজে নিতে পারে এবং এটার সাথে আপনার ইনকাম ও বেশি পরিমানে হতে হবে। কারণ, Dedicated server এর দাম অনেক বেশি।

আশাকরি বুঝতে পেরেছেন হোস্টিং কেনার আগে কোন বিষয় গুলোর উপর নজর দিতে হবে।

হোস্টিং এর দাম (Hosting Price)

বিভিন্ন প্রকার হোস্টিং এর দাম বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট হোস্টিং এর জন্য মাসিক কত টাকা থেকে কত টাকা পর্যন্ত Rent হতে পারে তার একটি বিবরণ দিলাম।
  • share hosting (শেয়ার হোস্টিং) – ৪০ থেকে ৩০০ টাকা
  • V.P.S – virtual private server(ভার্চুয়াল প্রাইভেট হোস্টিং) – ২,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা
  • Dedicated hosting (ডেডিকেটেড হোস্টিং) – ৬০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা
  • Cloud hosting (ক্লাউড হোস্টিং) – ৪০০ থেকে ১,০০০ টাকা
  • Reseller Hosting (রিসেলার হোস্টিং) – ৩,০০০ থেকে ৮০,০০০ টাকা

হোস্টিং সার্ভার কি?

যখন কোন ওয়েবসাইট হোস্টিং এর সাহায্যে কানেক্ট করা হয় তখন, ওই ওয়েবসাইটের সমস্ত ডাটা নির্দিষ্ট হোস্টিং কোম্পানির সার্ভারে জমা হয়। এই সার্ভারটিকে হোস্টিং সার্ভার বলা হয়।

দেশের সেরা ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইডার

যদি আপনি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জন্য হোস্টিং কিনতে চান। তাহলে এই সমস্ত বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে হোস্টিং কিনতে করতে পারেন। এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের দেশের সব থেকে ভালো ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইডার কোম্পানি।
  • Hostgator
  • Namecheap
  • Siteground
  • A2 hosting
  • Hostinger
  • Bluehost
  • Dreamhost
  • GreenGeeks
  • BigRock

কিভাবে হোস্টিং কিনতে হয়

আপনি যদি হোস্টিং কিনতে চান তাহলে এই সমস্ত ওয়েবসাইটগুলো থেকে আপনি আপনার ব্লগের ট্রাফিক অনুযায়ী হোস্টিং কিনতে পারেন। এইজন্য এখান থেকে যেকোন একটি ওয়েব সাইটে যাওয়ার পর অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করে হোস্টিং প্ল্যান বেছে নেওয়ার পর পেমেন্ট করে হোস্টিং কিনতে পারেন।

যদি আপনি, প্রথমবার ব্লগ তৈরি করে থাকেন এবং নতুন ব্লগের জন্য হোস্টিং কিনতে চান। তাহলে আপনাদের Hostinger থেকে Shared হোস্টিং নেওয়ার কথা বলব। এখান থেকে আপনি খুবই কম টাকায় হোস্টিং কিনতে পারবেন। পরবর্তীকালে ব্লগিং ভালোভাবে শিখে নেওয়ার পর, আপনি আপনার ব্লগের ট্রাফিক অনুযায়ী আপনার হোস্টিং প্ল্যানটি, ভবিষ্যতে Upgrade করতে পারেন।

Hosting কিভাবে কাজ করে

আমরা জেনে থাকবেন যে, ডোমেইন নেমের সাহায্যে কোন হোস্টিং কে পয়েন্ট করা হয়। যখন কোন ইন্টারনেটে ব্যবহারকারী কোনো ওয়েবসাইটের নাম সার্চ করে তখন ওই নির্দিষ্ট ডোমেইনের আইপি অ্যাড্রেসটি; হোস্টিং এর সাথে পয়েন্ট করে ডোমেইন এবং হোস্টিং এর মধ্যে কানেকশন তৈরি করে।

ডোমেইনকে হোস্টিং এর সাথে সংযুক্ত পড়া জন্য ডোমেইন নেম সিস্টেম বা DNS ব্যবহার করা হয়। DNS এর মাধ্যমে কোন ডোমেইন বুঝতে পারে নির্দিষ্ট ডোমেইনটি কোন সার্ভার এর সাথে যুক্ত আছে। যেহেতু ইন্টারনেটে অনেক ধরনের Server মজুদ আছে। তাই ডিএনএস, নির্দিষ্ট ডোমেইনটি কোন সার্ভার এর অন্তর্ভুক্ত এটি খুঁজে বের করার পর, নির্দিষ্ট হোস্টিং এ কানেক্ট করে।

DNS এর সাহায্যে ডোমেইন নেমটি নির্দিষ্ট সার্ভারে পয়েন্ট করার পর, হোস্টিং নির্দিষ্ট আইপি এড্রেসটি থেকে তার সমস্ত ডাটা দেখানোর অনুমতি পায় এবং হোস্টিং সার্ভারটি অনুমতি দিলে সেই হোস্টিং এর সমস্ত ডাটা কোন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী দেখতে ও পড়তে পারে।

এই সমস্ত কিছু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে হয়। তাই ব্যবহারকারীরা এই সমস্ত কিছু বুঝতেই পারেনা। তারা ইন্টারনেটের মধ্যে কোন কিছু সার্চ করলে সেগুলো নিমেষের মধ্যে দেখতে পায়।

সঠিক হোস্টিং কি দেখে নির্বাচন করব?

আপনি যদি প্রথমবারের জন্য হোস্টিং কিনতে চান তাহলে আপনাকে অনেক জিনিস মাথায় রেখে হোস্টিং কিনতে হবে। কারন একটি ওয়েবসাইট এবং হোস্টিং অনেক কিছু জিনিসের উপর নির্ভর করে। এই জন্য নিচে দেওয়া ইনফর্মেশন গুলো প্রথমে জেনে নিয়ে হোস্টিং ক্রয় করুন।

Uptime: হোস্টিং এর কাজ হল আপনার ডোমেইনটিকে সর্বদা ইউজারদের সামনে দেখানো এবং আপনার ওয়েবসাইট টি ইন্টারনেটের সাথে রাখা। কিন্তু এমন অনেক ধরনের হোস্টিং কোম্পানি আছে যেগুলো বেশিরভাগ সময় ডাউন হয়ে যায় এবং ডাউন হওয়ার ফলে অনেক সময় আপনার ওয়েবসাইটটি ইন্টারনেট থেকে সরে যেতে পারে।

এই জন্য হোস্টিং কেনার আগে যে কোম্পানি আপনার ওয়েবসাইটটি, ৯৯.৯% Uptime দেবার গ্যারান্টি নেবে সেই কোম্পানি নির্বাচন করুন।

Speed: কোন ওয়েবসাইট বা ব্লগের মেইন জিনিস স্পিড। যদি আপনার ওয়েবসাইট open হতে দেরি হয় তাহলে ব্যবহারকারীরা আপনার ওয়েবসাইট ছেড়ে অন্য কোন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবে। কারণ ইন্টারনেটে অনেক ধরনের ওয়েবসাইট আছে যেগুলো একই ধরনের তথ্য প্রদান করে। তাই কোনো ব্যবহারকারী ওয়েবসাইট খোলার অপেক্ষায় থাকবে না সে সাথে সাথে অন্য কোন ওয়েবসাইটে চলে যাবে।
এইজন্য আপনি যে হোস্টিং নিচ্ছেন তার স্পিড কেমন যাচাই করুন। এর জন্য যেসব ব্যবহারকারী আগে থেকেই ওই কোম্পানির হোস্টিং ব্যবহার করেছেন তাদের সাথে আলোচনা করতে পারেন।

ওয়েবসাইটের স্পিড কখনো কখনো এসইওর ওপরও প্রভাব ফেলে। যদি আপনার ওয়েবসাইটের স্পিড কম হয় তাহলে গুগল আপনার ওয়েবসাইটটি পেছনে রেখে দেবে।

Bandwidth: আপনার ওয়েবসাইটে প্রত্যেক সেকেন্ডে কত পরিমান ডাটা এক্সেস করা যায় সেটাকেই ব্যান্ডউইড বলে। যদি আপনার হোস্টিং এর ব্যান্ডউইথ কম হয়, তাহলে আপনার ওয়েবসাইটটি অধিক পরিমাণে ট্রাফিক আসার ফলে স্লো হয়ে যাবে। এইজন্য যদি পারেন তাহলে আনলিমিটেড ব্যান্ডউইথ যুক্ত হোস্টিং নির্বাচন করুন।

Disk Space: হোস্টিং এর সব থেকে মূল বিষয় হল হোস্টিং এর জায়গা। যেখানে ওয়েবসাইটের সমস্ত ডাটা জমা হয়। মোবাইলের মেমোরি কার্ডের মত হোস্টিং এর ও একটি নির্দিষ্ট লিমিট থাকে। তাই আপনার হোস্টিং এর Disk Space ভর্তি হয়ে যায় তাহলে আপনি নতুন করে কোন ডাটা আপনার হোস্টিং এ জমা করতে পারবেন না। এই জিনিসটা মাথায় রেখে আনলিমিটেড Disk Space যুক্ত হোস্টিং সার্ভিস বেছে নিন।

Customer Support: যে হোস্টিং কোম্পানি থেকে হোস্টিং কিনছেন; দেখে নিন তাদের সাপোর্ট সিস্টেম কেমন। কখনো কখনো টেকনিক্যাল জ্ঞান না থাকার কারণে হেল্প এবং সাপোর্ট এর প্রয়োজন পড়ে। কারণ হোস্টিংয়ের অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয় যেগুলো সবসময় নিজের পক্ষে ঠিক করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এইজন্য হোস্টিং কেনার আগে অবশ্যই দেখে নেবেন আপনি যে হোস্টিং কোম্পানিটি নির্বাচন করেছেন তাদের কাস্টমার সাপোর্ট কেমন রয়েছে।

Security: আপনার ওয়েবসাইটের সব থেকে বড় যে জিনিসটি নজরে রাখতে হবে, সেটি হল সিকিউরিটি। যদি আপনার হোস্টিং কোম্পানি, ওয়েবসাইটের জন্যে সিকিউরিটি প্রদান না করে তাহলে আপনার ওয়েবসাইটের তথ্য গুলো চুরি হবার ভয় থাকে। এইজন্য যে ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি, ওয়েব-সাইটের সিকিউরিটি বৃদ্ধি করে,এরকম কোম্পানি নির্বাচন করুন।

ওয়েবসাইটের জন্য SSL সার্টিফিকেট অবশ্যই একটি বড় ভূমিকা পালন করে। SSL সার্টিফিকেট ওয়েবসাইটে লাগানোর ফলে তার সিকিউরিটি অনেকগুণ বেড়ে যায়। এইজন্য হোস্টিং কেনার সময় দেখে নিন কোম্পানিটি SSL সার্টিফিকেট প্রদান করছে কিনা।

Money Back Guarantee: কখনো কখনো কোন হোস্টিং সার্ভিস ব্যবহার করার সময়, ওই হোস্টিং সার্ভিসটির বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তাই ওই হোস্টিং সার্ভিস ছেড়ে অন্য কোন কোম্পানির হোস্টিং সার্ভিস এ যাওয়ার দরকার পড়ে। এই জন্য আপনি বর্তমানে যে হোস্টিং কোম্পানিতে জয়েন করতে চাইছেন অবশ্যই দেখে নিবেন তারা সার্ভিসের জন্য পেমেন্ট দেওয়ার পর, সেই টাকা ফেরত দেয়ার গ্যারান্টি দিচ্ছে কিনা বা দিলেও সেটি কতদিনের জন্য।

কোনো হোস্টিং কোম্পানিতে যদি আপনি হোস্টিং সার্ভিস কিনতে চান তাহলে অবশ্যই মানিব্যাক গ্যারান্টি দেয় এরকম ধরনের প্রতিষ্ঠান থেকে হোস্টিং কিনুন। যার ফলে আপনি সহজেই আপনার টাকা ফেরত নিয়ে অন্য কোন হোস্টিং কোম্পানিতে ওয়েবসাইটটি ট্রানস্ফার করতে পারবেন।

উপসংহার:

আশাকরি উপরের আর্টিকেলটি থেকে হোস্টিং কি, হোস্টিং কত প্রকারের হয় এবং হোস্টিং কিভাবে কাজ করে এই সম্বন্ধে পুরো ইনফরমেশন পেয়ে গেছেন। যদি আপনি নতুন ব্লগ তৈরি করে থাকেন। তাহলে আপনি শেয়ার হোস্টিং ব্যবহার করতে পারেন। অন্যথায় আপনি ওয়েবসাইটের ট্রাফিক অনুযায়ী হোস্টিং এর নির্বাচন করুন। এই পোষ্টটি সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আর হ্যাঁ অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জরিপ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url