সিজারের পর পেট কমানোর উপায়

সিজারের পর পেট কমানোর উপায় - সিজারের পর অনেকেরই পেট অনেক বড় দেখায় যা সাধারণত ফিটনেসে অনেকটা প্রভাব ফেলে থাকে। অনেকের অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণে নিজের পছন্দমত পোষাকও পড়তে পারেন না। যার কারণে অনেকে এই সময়টাই অনেক বেশি হতাশায় ভুগে থাকেন।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যারা সিজার করে থাকেন তাদের সেলাইয়ের দাগ শোকানোর জন্যই তিন থেকে চার মাস পর্যন্ত সময় চলে যায়। কিন্তু সমস্যা এটা নয় সমস্যা হচ্ছে সিজারের পর পেট অনেক বড় হয়ে যায়। আজকের আটিকেলের মাধ্যমে জানাবো সিজারের পর পেট কমানোর উপায় সম্পর্কে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক:-

সিজারের পর পেট বড় হয় কেন

অনেকের প্রেগনেন্সির পর ওজন অনেক বেড়ে যায়। গবেষণায় এটা প্রমাণিত হয়েছে যে সিজার করার পর প্রায় ৮০ শতাংশ মেয়েদের ক্ষেত্রে ওজন বাড়ার সমস্যাটা হয়ে থাকে। বিশেষ করে এই সময় মেয়েদের পেট অনেক বড় হয়ে যায়।বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সিজারের পর রোগী অনেক বেশি পরিমাণে খাওয়া-দাওয়া করে থাকেন তাছাড়া এই সময়টাতে রোগী কোন কায়িক পরিশ্রম করতে পারেন না। যার কারনে সাধারণত সিজারের পর শরীরের ওজন বাড়ার পাশাপাশি পেট অনেক বড় হয়ে যায়। তবে সময়ের সাথে সাথে এই সমস্যাটা আবার ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যায়।

সিজারের পর পেট কমানোর উপায়

সিজারের পর পেট বেড়ে যাওয়ার সমস্যাটা খুবই বিরক্তিকর। অনেকের সৌন্দর্য এর মাধ্যমে নষ্ট হয়ে থাকে। তবে কিছু পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো অবলম্বন করার মাধ্যমে খুব সহজেই এই সমস্যাটা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

১.বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করাতে হবে

সিজারের পর পেট কমানোর সব থেকে মজার উপায় হচ্ছে বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করাতে হবে। নিয়মিত সিজারের রোগী যদি তার বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করাতে পারে তাহলে ৬ মাসের মধ্যে তার পেটের অতিরিক্ত মেদ অনেক কমে যাবে। অনেক ডাক্তার রোগীকে পেট ছোট করার জন্য এই পরামর্শটি দিয়ে থাকেন।

২.ব্যায়াম করার অভ্যাস করতে হবে

সিজার করার পর রোগীকে একটানা ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত রেস্টে থাকতে হবে। তারপর রোগী চাইলে পেটের বাড়তি মেদ কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।অর্থাৎ রোগী যখন সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক কাজকর্ম করা শুরু করবে তখন নিয়মিত পেটের কিছু ব্যায়াম  করা যেতে পারে তাহলে খুব সহজেই পেটের বাড়িতে মেদ দূর হবে।তবে অবশ্যই এই ক্ষেত্রে রোগীকে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে হবে তারপর এই ব্যায়ামগুলো  করতে হবে।বিশেষ করে এই সময়টাতে হাঁটাহাঁটির মতো কিছু ব্যায়াম করা যেতে পারে।

৩.পেটে বেল্ট পড়ে থাকতে হবে

সিজারের পর রোগীকে দ্রুত পেট কমানোর জন্য বেল্ট পড়া শুরু করতে হবে। এই সময়টাতে রোগীকে খাওয়া, ঘুম এবং গোসল ছাড়া প্রায় সকল ক্ষেত্রে পেটে বেল্ট পড়ে থাকতে হবে। বেল্ট আরামদায়ক না হলেও এর মাধ্যমে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে ভালো রেজাল্ট পাওয়া যায়।

৪.প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে

আমাদের শরীরের জন্য পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পানি শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর করতে সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া শরীরের ফ্লুইড ব্যালেন্স রক্ষা করে থাকে পানি।তাই শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করার মাধ্যমে দ্রুত ওজন এবং পেটের মেদ কমানোর জন্য এই সময়টাতে প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। তাহলে দেখবেন কিছুদিনের মধ্যেই পেটের মেদ অনেকটা কমে গিয়েছে।

৫.মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া বাদ দিতে হবে

ওজন দ্রুত বাড়ানোর জন্য মিষ্টি জাতীয় খাবার দায়ী। অনেক রোগী রয়েছেন যারা সিজারের পর মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করে থাকেন। কিন্তু তারা নিজেরাই জানেন না এই খাবারগুলো খাওয়ার মাধ্যমে তাদের পেটের মেদ আরো অনেক বেড়ে যেতে পারে। তাই এই সময়টাতে অবশ্যই মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তাহলে দেখবেন পেটের মেদ আস্তে আস্তে কমতে শুরু করেছে।

৬.খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনুন

সিজারের পর পেট কমানোর উপায় বা সিজারের পর পেট কমাতে হলে অবশ্যই খাদ্য তালিকার দিকে নজর দিতে হবে। এই সময়টাতে বেশি পরিমাণে প্রোটিন জাতীয় খাবার ও ফাইবার জাতীয় খাবার খেতে হবে। কেননা ফাইবার জাতীয় খাবার আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। সিজারের পর ভাত একটু কম করে খেতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাস শুরু করতে হবে। তাহলে দেখবেন খুবই অল্প সময়ের মধ্যে পেটের মেদ আস্তে আস্তে ঝরতে শুরু করেছে।

৭.স্ট্রেস কমিয়ে ফেলতে হবে অর্থাৎ সব সময় টেনশন মুক্ত থাকতে হবে

স্ট্রেস হরমোনের সাথে শরীরের বাড়তি ওজনের সম্পর্ক রয়েছে। তাই শরীরের স্বাভাবিক ওজন বজায় রাখতে সব সময় স্ট্রেসকে দূরে রাখতে হবে। কেননা এর মাধ্যমে মানসিক অশান্তি সৃষ্টির পাশাপাশি শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। সিজারের রোগীকে সিজারের পর অবশ্যই টেনশন মুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে।

সিজারের পর পেটে কতদিন ব্যাথা থাকে 

সিজারের পর পেটে কতদিন ব্যাথা থাকে এই নিয়ে অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। সিজারের ব্যথা যেতে অনেকের দুই তিন মাস পর্যন্ত সময় লেগে যায়। আবার অনেক রোগী রয়েছেন যাদের ব্যথা অনেক আগেই সেরে যায়। তবে সিজারের রোগীকে অবশ্যই তিন থেকে চার মাসের আগে ভারি কোন কাজ না করাই ভালো। আর যদি কোন কিছু করার প্রয়োজন পড়ে তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী করা উচিত।

শেষ কথা

সিজারের পর পেট কমানোর উপায় বা কিভাবে খুব সহজে সিজারের পর পেটের বাড়তি মেদ কমিয়ে ফেলবেন আশা করি আজকের আটিকেলটি পড়ার মাধ্যমে এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়ে গেছেন। তাই যারা সিজার করার পর পেটে অতিরিক্ত মেদের সমস্যায় রয়েছেন তারা উক্ত পদ্ধতিতে খুব সহজেই সমস্যার সমাধান করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জরিপ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url