ইউনিক আইডি কি? What is UID(unique identifier).

স্কুল ও কলেজের ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ইউনিক আইডি তৈরীর কার্যক্রম আবার শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় জাতীয়তা সনদের মতই প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে একটি ডিজিটাল কার্ড (প্লাস্টিকের এটিএম/স্মার্ট কার্ডের মত) দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পাঁচ বছর থেকে ১৭ বছর বয়সের দ্বাদশ শ্রেণীর সব ছাত্র-ছাত্রী এই ইউনিক আইডি পাবে। এই আইডিতে ১০ বা ১৬ ডিজিটের শিক্ষার্থীদের সনাক্ত নাম্বার থাকবে যা পরবর্তীতে ওই শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার হবে। এর ফলে জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরীর সময় আলাদা করে তথ্য সংগ্রহের দরকার হবে না। ২০২২ সাল থেকে শিক্ষার্থী শনাক্ত করা ইউনিক আইডি দেওয়া শুরু হবে।

১৭ জানুয়ারি২০২২ তারিখ থেকে ইউনিক আইডি সফটওয়্যার এর ডাটা এন্ট্রি কাজ শুরু হয়েছে। এই ইউনিক আইডিতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মৌখিক ও শিক্ষা সংক্রান্ত সকল তথ্য থাকবে।

পোস্ট সূচিপত্র:

ইউনিক আইডি কি?

ইউনিক আইডি কি? ইউনিক আইডি হল এমন একটি আইডি নম্বর যা ঐ সিস্টেমে থাকা অন্য কারো নম্বরের সাথে মিলবে না। Unique শব্দটি থেকে বোঝা যায় এটি আলাদা। ইউনিক আইডিতে ডিজিটাল ভাবে শিক্ষার্থীর যাবতীয় তথ্য দেখা যাবে। সেখানে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য আলাদা একটি রোল নাম্বার দেওয়া হবে। এই রোল নাম্বার টি প্রত্যেক ক্লাসে ব্যবহার করতে হবে এবং সবসময় একই রকম থাকবে।

অর্থাৎ কাউকে একদম আলাদাভাবে বোঝাতে যে আইডি নম্বর ব্যবহার করা হয় সেটাই ইউনিক আইডি। যেমন: একটি ক্লাসরুমে রোল-১১ শুধুমাত্র একজনেরই হবে। শ্রেণীকক্ষের প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীর আলাদা আলাদা রোল বা ইউনিক আইডি থাকবে।বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কাজের জন্য ইউনিক আইডি কার্ড ব্যবহার করা হয়।

যেমন: আপনার আইডি কার্ডের নম্বর বাংলাদেশের অন্য কারো আইডি কার্ডের নম্বরের সাথে মিলবে না। কারণ এটি আপনার ইউনিক আইডি।

কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং তথ্য ব্যবস্থার বিকাশের প্রথম দিকে ইউনিক আইডি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছিল। সাধারণভাবে, এটি একটি পারমাণবিক ডেটা টাইপের সাথে যুক্ত ছিল।

ইউনিক আইডির ধরণ

কাজের ও ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে unique id কে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।

১. সিরিয়াল নম্বর: সিরিয়াল অনুযায়ী প্রতেকের আলাদা আলাদা নম্বর থাকবে। যেমন ক্লাশরুমে থাকে ১,২,৩,৪,৫,৬ ইত্যাদি।

২. Random Unique id: Random ইউনিক আইডি কোনো সিরিয়াল অনুযায়ী হয় না। এটা হ্যাসের মাধ্যমে হয়; আবার র‌্যান্ডম নম্বর জেনারেটর দিয়েও করা হয়।

৩. নম্বর আর কোডের ভিত্তিতেও হয়ে থাকে।

উপরের পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে ইউনিক আইডি তৈরি করা হয়। যে কোনো একটা পদ্ধতি দিয়ে অথবা দুই-তিনটা পদ্ধতি মিশ্রিত করে ইউনিক আইডি তৈরি করা হয়।

ইউনিক আইডি কোথায় ব্যবহার করা হয়

১. জাতীয় পরিচয় পত্র / ন্যাশনাল আইডি কার্ড / NID তে ব্যবহার করা হয়।

২. Digital object identifiers : যেমন: আমরা যখন ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করি। তখন এই ধরনের ডিজিটাল আইডি পেয়ে থাকি।

৩. Track and trace: কোনো কিছু ট্রাক করার জন্য ইউনিক আইডি লাগবে। ইউনিক আইডি না হলে আমাদের বুঝতে ভুল হবে কোনটির কথা বলা হচ্ছে।

৪. Payment card number : একটি ব্যাংকের যতগুলো গ্রাহক থাকে প্রত্যেকের ইউনিক ব্যাংক একাউন্ট নম্বর; যেটাকে একাউন্ট নম্বর বলে থাকি।

৫. গাড়ির নম্বর প্লেট: হ্যা, বন্ধুরা আমাদের সামনে যত গাড়ি আসে প্রত্যেকেরই নম্বর ইউনিক। যদি ইউনিক নম্বর না হয় তাহলে বুঝতে হবে গাড়িটিতে সমস্যা আছে।

৬. মোবাইল নম্বর: আমাদের মোবাইল নম্বরটি একেবারে ইউনিক। ইউনিক আইডি বা নম্বরটি ইউনিক না হলে অনেক সময় একজনের কল আরেকজনের কাছে চলে যেত।

৭. আপনি যে কম্পিউটার বা মোবাইলটি ব্যবহার করছেন তারও একটি ইউনিক আইডি আছে; সেটা হল IMEI নম্বর। এই নম্বরটি পৃথিবীর কারোর সাথে মিলবে না।

৯. মোবাইল বা কম্পিউটারের MAC(Media Access Number) address ও একটি ইউনিক নম্বর হয়। এটা কারো কম্পিউটারের সাথে মিলবে না।

ইউনিক আইডি ফরম ডাউনলোড

ইউনিক আইডি জন্য শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের পাশাপাশি নিমোক্ত ডকুমেন্টস সংযুক্ত করে দিতে হবে।

১. শিক্ষার্থীদের সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি ছবি (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড রঙ্গিন ছবি যা সামনের দিক থেকে তোলা যেন দুই চোখ একই সাথে দৃশ্যমান হয়)।
২. শিক্ষার্থীর জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুলিপি।
৩. শিক্ষার্থীর মাতা-পিতা এবং প্রয়োজন ক্ষেত্রে অভিভাবকের জাতীয় পরিচয় পত্রের অনুলিপি।
৪. শিক্ষার্থীর মাতা-পিতা এবং প্রয়োজন ক্ষেত্রে অভিভাবকের জন্মনিবন্ধনের অনুলিপি (যদি থাকে)।

ইউনিক আইডি ফরম পূরণের নিয়ম ও নির্দেশনা

শিক্ষার্থীরা তাদের ইউনিক আইডি Student Unique ID Card ফরম পূরণের ও সংগ্রহের জন্য অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করে ফরমটি পূরণ করতে হবে। উনিক আইডি ফরম পূরণের নিয়ম ও নির্দেশনা নিচে বিস্তারিত দেওয়া হল-

১. শিক্ষার্থীদের মৌলিক তথ্য প্রদান: শিক্ষার্থীরা তাদের ইউনিক আইডি ফরমে তাদের মৌলিক তথ্যাদি যেমন: নাম ও জন্ম তারিখ অবশ্যই তাদের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন অনুসরণ করে লিখতে হবে। কারো যদি অনলাইন জন্ম নিবন্ধন করা না থাকে তাহলে অবশ্যই রেজিস্ট্রারের কার্যালয় পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধন করে নিতে হবে।
২. পিতা ও মাতার তথ্যপ্রদান: শিক্ষার্থীদের পিতা ও মাতার তথ্য অবশ্যই পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র অনুসরণ করে লিখতে হবে। যদি কারো তথ্য পিতা-মাতার আইডি কার্ডের সাথে না মিলে তাহলে তা সংশ্লিষ্ট কার্যালয় থেকে সংশোধন করে নিতে হবে।
৩. শিক্ষা ও অন্যান্য তথ্যাদি: যথাযথ সর্তকতা অনুসরণ করে শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্ববর্তী ও বর্তমান শিক্ষাগত তথ্য প্রদান করতে হবে। শ্রেণি শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান প্রধান তা দেখে সত্যায়িত করাতে হবে।


পরিশেষে বলা যায় যে. এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা ইউনিক আইডি সম্পর্কে একটু হলেও জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছে। আপনাদের যদি এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আর কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জরিপ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url